শতবর্ষ আয়ুর লক্ষ্য পদ্মা সেতুর

পদ্মা সেতুর আয়ু অন্তত একশো বছর ধরে রাখতে চায় কর্তৃপক্ষ। বেশি ওজনের পণ্য নিয়ে যানবাহন চললে স্থায়িত্ব কমে যায় সেতু্-সড়কের। এজন্য ১৬ টনের বেশি ওজনের পণ্যবাহী ট্রাক উঠতে দেয়া হবে না সেতুতে। যমুনা সেতুর এই অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়েই পদ্মা সেতুতে নতুন ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রমত্তা পদ্মার বুক চিরে চারলেনের সড়ক ধরে ৮০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে গাড়ি। সেই দারুণ আগ্রহে বিভোর এখন গোটা জাতি। দীর্ঘ দিনের সেই স্বপ্ন পূরণ হতে আর মাত্র ছয় দিন বাকি। এরপর অবসান হবে নদীর দুই পাড়ের বহু বছরের দুর্ভোগ। ইতোমধ্যে সেতুর সব ধরনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। পদ্মা বিশ্বে খরস্রোতা নদীর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। প্রমত্তা পদ্মার বুকে স্বপ্নের এ সেতু নির্মাণে জার্মানি থেকে এসেছে হ্যামার, লুক্সেমবার্গ থেকে রেলের স্ট্রিংগার, চীন থেকে ট্রাস, অস্ট্রেলিয়া থেকে পরামর্শক।
এমনিভাবে দেশ-বিদেশের প্রযুক্তি, মেধা ও শ্রমে পদ্মাসেতু আজ বাস্তব। খরস্রোতা নদীতে বিশাল এ স্থাপনা নির্মাণের পেছনে রয়েছে দেশি-বিদেশি ১২০০ প্রকৌশলী ও ২০ হাজার শ্রমিকের বিশাল এক কর্মযজ্ঞের গল্প।দেশে দ্রুত বাড়তে থাকা অর্থনীতির কারণে পদ্মা সেতুতে দিনে দিনে বাড়বে গাড়ির চাপ। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বহুগুন বাড়বে পণ্য পরিবহনও। সেতুটি একশ বছরের স্থায়িত্ব ধরে বানানো হয়। তাই ট্রাক-কার্ভাড ভ্যানে ১৬ টনের ওপরে পণ্যবাহী পরিবহন নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সড়ক-সেতুতে ওজন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু দেশে সে নিয়ম-কানুন মানার প্রবণতা কম। এভাবে বেশি ওজনের গাড়ি চললে কমে আসে সড়ক ও সেতুের আয়ু। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে ওজন নিয়ন্ত্রণের কী ব্যবস্থা আছে জানতে চাইলে স্পষ্ট জবাব প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলামের। তবে এক্ষেত্রে শুধু সেতু কর্তৃপক্ষ নয় বিআরটিএকেও নিতে হবে কঠোর ভূমিকা, বলছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান নানা কৌশলে বেশি পণ্য পরিবহনের সুযোগ খুঁজতে থাকে সবসময়।
পদ্মা সেতুতে ওভারলোডিং নিয়ন্ত্রণে দুই পাড়ের ওজন নিয়ন্ত্রণ কক্ষ নির্মাণ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। যা পরিচালনা করবে সড়ক বিভাগ। এর লক্ষ্য একই সাথে মহাসড়ক ও সেতুতে ওভারলোডিং নিয়ন্ত্রণ। মহাসড়কে সর্বোচ্চ ওজনসীমা সাড়ে ১৫ টন হলেও সেতুতে আরো বেশি। এখন কোন প্রক্রিয়ায় সড়ক ও সেতু বিভাগ এই রুটে ওজন নিয়ন্ত্রণ করবে সেটি নিয়ে চলছে আলোচনা।