Type to search

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

জাতীয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও উত্যক্তের লিখিত অভিযোগ করে এখন দুই ছাত্রী আতঙ্কে ভুগছেন। নিরাপত্তা চেয়ে শুক্রবার দুপুরে মহানগরীর মতিহার থানায় দুইটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী ওই দুই ছাত্রী। মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী ছাত্রীদের দাবি, শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর থেকে আতঙ্কে আছেন। অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ আসছে। ওই শিক্ষকের পক্ষের অনেক শিক্ষার্থী এসে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। শিক্ষকের অনেক ক্ষমতার কথা বলে ছাত্রত্ব বাতিলের ভয় দেখানো হচ্ছে। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হওয়ায় তারা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হবার ভয়ে হল থেকে বের হতে পারছে না।

মতিহার থানার ১১০৮ ও ১১০৯ নম্বর সাধারণ ডায়েরি দুইটিতে তারা উল্লেখ করেন, ‘বিভিন্নভাবে অভিযোগপত্রটি প্রত্যাহার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। একারণে আমি আমার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বোধ করছি।’

এর আগে সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণুকুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে আইইআর’র দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডাক যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইইআর পরিচালক বরাবর এই অভিযোগ পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, গত মঙ্গলবার দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সে লিখিত অভিযোগ করেছে।

দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্রী তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘আমিও অনেক ভাবে বিষ্ণুকুমার অধিকারীর দ্বারা মানসিক হেনস্থা ও উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছি। মেয়েদের শরীর সম্পর্কে আপত্তিজনক কথা, তার চেম্বারে নিয়ে দীর্ঘক্ষন বসিয়ে রাখা এগুলা সে করেছে। আমি নিষেধ করা সত্যেও তিনি আমাকে উত্ত্যক্ত করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে আমি মানসিক ভাবে খারাপ অবস্থায় ছিলাম। কাউকে ভয়ে বলতে পারসিলাম না।’

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী এই ছাত্রী বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ওই শিক্ষক আমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। আমি ভয়ে কাউকে বলতে পারছিলাম না। আমার এক বড় আপু মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ দিলে সেদিন গিয়ে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছি, গতকাল (বৃহস্পতিবার) লিখিত দিলাম।

এদিকে ছাত্রীদের অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান। তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রক্টর বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রশাসন সবসময় সজাগ। আমরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করব।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইইআরের প্রথম ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ক্লাসে স্যারের পক্ষের কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা নানা কথা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। ভয়ে ও সংকোচে অন্য শিক্ষার্থীরা মুখ খুলতে পারছে না। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছোট খাটো আরো অনেক ব্যাপার আছে। তদন্ত কমিটি শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তারা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

গত মঙ্গলবার অভিযোগের পর ওই দিন বিকেলেই এক জরুরী সভা ডেকে ওই শিক্ষককে ২য় ও ৪র্থ বর্ষের সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়। এবং আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসান চৌধুরিকে প্রধান করে তিন সদস্যোর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তবে শুরু থেকে বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারী। এবং ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বাদি এই শিক্ষকের।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *