
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে প্রার্থী নির্বাচনে বড় চমক সৃষ্টি করেছে বিএনপি। এ আসনে কেশবপুরে বিএনপির রাজনীতিতে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেশবপুর থানা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ। তাকে বাদ রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর শ্রাবণ বলেন ‘কেশবপুর আসনটি দীর্ঘদিন ধানের শীষের ছিল না। আমি জনগণের ভোটে এ আসন পুনরুদ্ধার করে বিএনপিকে উপহার দিতে চাই।’
এলাকাবাসীরা জানায়, শ্রাবণের পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম স্থানীয় সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের চিংড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
শ্রাবণ দীর্ঘদিনের পারিবারিক রাজনৈতিক চর্চার বিপরীতে গিয়ে তিনি যোগ দেন বিএনপির রাজনীতিতে। আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিএনপির রাজনীতি করার বিষয়টি শ্রাবণের বাবাও ভালোভাবে নেননি।এ কারণে ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। শ্রাবণ দীর্ঘদিন বাড়িতে যাননি। এমনকি পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানেও অংশ নেন না তিনি।
গত ২০ সেপ্টেম্বর নিজ জন্মভূমি যশোরের কেশবপুরে আসেন শ্রাবণ। দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পর নিজ উপজেলায় আসায় হাজার হাজার নেতাকর্মীর ফুলের শুভেচ্ছায় সিক্ত হন। বিশেষ করে যুব সমাজের মধ্যে ব্যাপক গণজাগরণ সৃষ্টি হয়। প্রায় দেড় হাজার মোটরসাইকেল ও শতাধিক মাইক্রোবাসে নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। কর্মসূচি থেকে তিনি যশোর-৬ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে ঘোষণা দেন।
গত ৩ নভেম্বর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩৭ আসনে যেসব প্রার্থীর নাম বিএনপি ঘোষণা করেছে, তাতে কাজী রওনকুল ইসলামের (শ্রাবণ) কে যশোর – ৬ কেশবপুর আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।
মনোনয়ন পাওয়ার পর রওনকুল ইসলাম বলেন, দল আমার ওপর যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে, তার প্রতিদান দিয়ে যেন জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকতে পারি, সেটাই হবে আমার প্রধান কাজ।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ৩১ দফায় তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার ঘোষণা আছে। আমি নির্বাচিত হলে বিশেষ করে কেশবপুরের তরুণদের কর্মসংস্থান নিশ্চিতে আমি কাজ করব। তরুণদের মাদক থেকে সরিয়ে কীভাবে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে তাদের ক্যারিয়ারকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেসব বিষয়ে আমি কাজ করব। পাশাপাশি দলকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করব।’
শ্রাবণ কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে। বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর করেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগে সান্ধ্য কোর্সে (স্নাতকোত্তর) অধ্যয়নরত অবস্থায় ২০২২ সালে ছাত্রদলের সভাপতি হয়েছিলেন তিনি।
‘অসুস্থতার’ কারণ দেখিয়ে ২০২৩ সালের আগস্টে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দুই মাসের মাথায় তাকে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়।
মনোনয়ন পাওয়ায় শ্রাবণ পুরোদমে গনসংযোগ করে চলেছেন। এ গনসংযোগে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ব্যাপকভাবে সমর্থন পাচ্ছে বলে জানা গেছ।
জাহিদ আবেদীন বাবু, কেশবপুর।

