অপরাজেয় বাংলা ডেক্স
বেনাপোল স্থলবন্দরের সামনে একটি বাঁশবাগান থেকে উদ্ধার হওয়া সদ্য ভূমিষ্ঠ নবজাতক শিশুকে নতুন পরিচয় দিয়েছে শার্শা উপজেলা প্রশাসন। সাত দিন চিকিৎসা ও প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে রাখার পর মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিশুটিকে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার সানাউর রহমান ও তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার সুমি দম্পতির কাছে দত্তক দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যৌথ তত্ত¡বাবধানে দত্তক প্রক্রিয়ার শুনাণিসহ সম্পূর্ণ আইনগত বৈধতা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঝিকরগাছা ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনি খাতুন।
শিশুটিকে উদ্ধার নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে মানবিক আবেদনে সাড়া দেন ১২ নিঃসন্তান পরিবার। তারা নবজাতককে দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। শেষে আইনগত নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই ও সামাজিক অনুসন্ধান শেষে যশোরের বাঘারপাড়ার সানাউর রহমান ও তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার সুমি পরিবারটিকে উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে শার্শা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, শিশুটি ভূমিষ্ট হওয়ার পর থেকে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. কাজী নাজিব হাসান ঘটনাস্থলে যান এবং শিশুটির চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় সার্বিক সহায়তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পরে, মানবিক আবেদনে ১২ নিঃসন্তান পরিবার শিশুটিকে দত্তক নিতে ইচ্ছা প্রকাশ করলে ১৮ নভেম্বর বোর্ড বসিয়ে শুনানিতে আইনগত নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই ও সামাজিক অনুসন্ধান শেষে যশোরের বাঘারপাড়ার সানাউর রহমান ও তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার সুমি পরিবারটিকে উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোছাঃ রনি খাতুন বলেন- ‘এক নবজাতককে অভিভাবকহীন অবস্থায় উদ্ধার করার পর চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন, শিশু কল্যাণ বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের সমন্বয়ে আইনগত সকল বৈধতা যাচাই করে দত্তক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। শিশুটি এখন একটি নিরাপদ পরিবার পেয়েছে।’
প্রসঙ্গত. গত ১২ নভেম্বর ভোরে বেনাপোল স্থলবন্দরের সাবেক ২২ নম্বর গেটসংলগ্ন হাকর নদীর পাড়ে বাঁশবাগান থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করেন গাজীপুর গ্রামের ছিদ্দিক গাজীর স্ত্রী নুরজাহান বেগম।
নুরজাহান বেগম জানান, রাতের শেষ ভাগে বাঁশঝাড়ের দিক থেকে বিড়ালের মতো অস্বাভাবিক শব্দ শুনতে পান তিনি। ভোরে সেখানে গিয়ে দেখতে পান-রক্তাক্ত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ শিশুটি পড়ে আছে এবং পাশে ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী।
এসময় নুরজাহান শিশুটির নাড়ি কেটে তাকে নিজের হেফাজতে নেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে উপস্থিত লোকজনের ভিড়ের মধ্যে ওই নারী দ্রæত সরে যায়। পরে নবজাতককে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. কাজী নাজিব হাসান ঘটনাস্থলে যান এবং শিশুটির চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় সার্বিক সহায়তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
সম্পাদনায়
মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ কামরুল ইসলাম
মোবাইল নং : ০১৭১০৭৮৫০৪০
Copyright © 2025 অপরাজেয় বাংলা. All rights reserved.