Type to search

মণিরামপুরে ছাত্রশিবিরের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা আহত, থানায় মামলা

মনিরামপুর

মণিরামপুরে ছাত্রশিবিরের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা আহত, থানায় মামলা

মণিরামপুরের ছাত্র শিবিরের সশস্ত্র হামলায় ছাত্রলীগ নেতা তারেক হোসেন (১৯) মারাত্মক আহত হয়েছে। গত ২৬ আগষ্ট বেলা ১২টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের জালঝাড়া গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত তারেক এই গ্রামের গোলাম আজমের পুত্র। এ ঘটনায় ১৩ ছাত্রশিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ২০/২৫ অজ্ঞাত জনের বিরুদ্ধে মণিরামপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৬ আগষ্ট উপজেলার সদর ইউনিয়নের জালঝাড়া গ্রামের গোলাম আজমের পুত্র মণিরামপুর সরকারি কলেজ শাখা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা তারেক হোসেন পাশ্ববর্তী দেলুয়াবাড়ী গ্রাম থেকে ব্যক্তিগত কাজ শেষ করে জালঝাড়া গ্রামে ফিরছিলেন। গ্রামের পূর্বপাড়া রাজু হোসেনের বাড়ির নিকট আসলে ছাত্র শিবিরের ৩০/৩৫ জনের একদল কর্মী ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রথমে ছাত্রলীগ নেতা তারেককে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে রড, জিআই পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। তিনি পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তখন তারেককে রামদা দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে। তিনি চিৎকার দিয়ে বিভিন্ন ভাবে বাচাঁর চেষ্টা করেন। তার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে রামদা দিয়ে তারেকের হাতে কোপ দেয়। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত ভেবে শিবির কর্মীরা সেখান থেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা আহত তারেককে উদ্ধার করে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামবাসী জানান, রাজুর বাড়ি প্রায় ছাত্রশিবিরের গোপন মিটিং বসে এবং শিবির নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ভয়ে কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলার দিনও কম্পিউটার, প্রজেক্টরসহ উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের এখানে উন্নত প্রশিক্ষণ চলছিল।

পরের দিন ২৭ আগষ্ট তারেক হোসেন কিছুটা সুস্থ হয়ে নিজে বাদী হয়ে মণিরামপুর থানায় ১৩ ছাত্রশিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত শেষে মামলাটি এজাহার ভুক্ত করা হয়েছে।

আসামিরা হলো, উপজেলার জালঝাড়া গ্রামের নূর ইসলামের পুত্র রাজু হোসেন (৩৫) ও ইউনুুস আলী মোল্যার পুত্র ইসমাইল হোসেন (৪৫), সদর উপজেলার সুতিকাটা কামালপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র হোসাইন (২৮), মণিরামপুরের দেলুয়াবাড়ি গ্রামের তবিবুর রহমানের পুত্র-আবু নাঈম (২০), আনছার আলীর পুত্র-আশরাফ আলী (৩০) ও আহম্মাদ আলীর পুত্র-মেহেদী হাসান (৩০), চালকিডাঙ্গা গ্রামের হাফিজুর রহমানের পুত্র নাসিম হোসেন (২২), গোলাম আজমের পুত্র আকাশ হোসেন (২৫) ও আজিজ গাজীর পুত্র বাবু হোসেন (৩৫), হরেরগাতী গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের পুত্র-ভোজগাতী ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি ওমর ফারুক (২২), কন্দর্পপুর গ্রামের গোলাম জিকরিয়ার পুত্র-আসাদুজ্জামান আসাদ (২৭) এবং জয়পুর গ্রামের এরশাদ আলী সরদারর পত্র-আব্দুল করিম সরদার (৫০) ও আব্দুল করিম সরদারের পুত্র ফেরদৌস হোসেন (২২)।

এদিকে হামলার বিষয়ে ছাত্রশিবিরের নেতাদের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

মণিরামপুর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান অভিযোগ করেন, ছাত্রশিবিরের কর্মীরা সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতার ওপর অতর্কিত হামলা করেছে। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। থানায় মামলা করা হয়েছে। আশা করি প্রশাসন দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে-আলম-সিদ্দিকী, মামলার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *