Type to search

বেড়িবাঁধ কেটে দখল চেষ্টা, থানায় অভিযোগ করায় ঘেরে বিষ

মনিরামপুর

বেড়িবাঁধ কেটে দখল চেষ্টা, থানায় অভিযোগ করায় ঘেরে বিষ

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:

মণিরামপুরে ভূমি দস্যু পবিত্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিল কপালিয়ায় সমবায় ভিত্তিক মৎস্য খামারের বেড়িবাঁধ কেটে দখল চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করায় সমিতির কয়েকজন সদস্যকে মারপিট করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হলে রাতের অন্ধকারে ঘেরে বিষ প্রয়োগ করায় লক্ষাধিক টাকার মাছ মরে নষ্ট হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের পাঁচাকড়ি গ্রামের হরেন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে পবিত্র বিশ্বাস ২০১৬ সালে ভবদহের বিল কপালিয়ায় বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে ১২০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ৩ বছরের জন্য ঘের নির্মাণ করে মৎস্য চাষ করে আসছিলেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে ৩ বছরের চুক্তি থাকলেও পবিত্র বিশ্বাস প্রভাব বিস্তার করে জোরপূর্বক আরও প্রায় ৩ বছর চাষ করে করেন। তার ওপর সঠিক ভাবে হারির টাকা পরিশোধ না করায় কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে নেহালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসাইনের অনুমোতি ক্রমে বিল কপালিয়ার ১১৫ জন কৃষক তাদের জমি সমবায় ভিত্তিক মৎস্য চাষ শুরু করেন গত পহেলা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল থেকে)। ইতোমধ্যে ওই ঘেরে প্রায় ২ লাখ টাকার মাছের পোনা ছাড়া হয়েছে।

পাঁচাকড়ি নমশুদ্রপাড়া ফসল ও মৎস্য চাষ সমবায় সমিতির সভাপতি মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মনিশান্ত মন্ডল জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে মৎস্য খামারের বেড়িবাঁধ পুনর্নিমাণ করা হচ্ছিল। কিন্তু এ সময় পবিত্র বিশ্বাস ও তার লোকজন এসে শ্রমিকদের মারপিট করে বেড়িবাঁধের ৩টি স্থান কেটে দিয়ে দখলের চেষ্টা চালায়। এ সময় সমিতির সদস্যসহ এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে তারা চলে যায়। এ ঘটনায় সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে পবিত্র বিশ্বাস, চিত্ত বিশ্বাস, সুভাষ, পরিতোষসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখসহ থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। ফলে এসআই প্রসেনজিত মন্ডল সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে উভয়পক্ষকে বুধবার সন্ধ্যার থানায় তলব করেন। সমবায় সমিতির লোকজন থানায় হাজির হলেও পবিত্র বিশ্বাস হাজির হননি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিন গেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুজন বিশ্বাস অভিযোগ করেন, থানায় অভিযোগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে পবিত্র বিশ্বাস ও তার লোকজন বুধবার রাতে ওই মৎস্য খামারে বিষ প্রয়োগ করেন। ফলে লক্ষাধিক টাকার মাছ মরে ভেসে ওঠে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে পবিত্র বিশ্বাস জানান, নতুন করে আরও ৫ বছরের জন্য ৬৩ জন কৃষকের কাছ খেকে ১২০ বিঘা জমি তিনি লিজ নিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে পবিত্র বিশ্বাস জানান, পুলিশের প্রতি আস্থা না থাকায় বুধবার তিনি থানায় হাজির হননি।

ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসাইন জানান, পবিত্র বিশ্বাস ভাল লোক নয়। তার বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি দখল করাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রসেনজিত মন্ডল জানান, আইন অমান্য করায় পবিত্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য ইতোপূর্বে টেকা নদীর তীর থেকে ছিন্নমুল বেশ কয়েকটি পরিবারকে উচ্ছেদ করে পবিত্র বিশ্বাস ও তার লোকজন সরকারি জমি দখল করেন। এ ব্যাপারে পবিত্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করা হয়। সেই থেকে ভবদহ এলাকায় পবিত্র বিশ্বাস ভূমি দস্যু হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *