
আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা
যশোরের ঝিকরগাছায় অফিস সহায়কের শিক্ষক পরিচয়ে অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগ ও মিথ্যাচার করছে শিমুলিয়া ইউনিয়নের মোকামতলা হাই স্কুলের অফিস সহায়কের মোঃ আনিছুর রহমান মিলন। নিজের বা গোত্রের কোন সদস্যদের নামে উক্ত জমির কোন প্রকার অফিসিয়াল কাগজপত্র না থাকার পরও দলীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রভাব বিস্তার করতে তাকে দেখা যায়। তিনি শিমুলিয়া ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর গ্রামের ইছাহাক আলীর ছেলে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শিমুলিয়া ইউনিয়নের মোকামতলা হাই স্কুলের অফিস সহায়কের, সাবেক ছাত্রদলের সেক্রেটারী ও বর্তমানে শিমুলিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি পদ প্রত্যাশী মোঃ আনিছুর রহমান মিলন। তিনি গত সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর সাংবাদিক সহ ২জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। উক্ত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন যে মোকামতলা হাই স্কুলের শিক্ষক এবং উত্তর রাজাপুর গ্রামস্থ বাওর তিনি সহ তার গ্রামের প্রায় ২০০জন পরিবার একত্রে সরকার কর্তৃক লিস নিয়ে মাছ চাষ করে থাকে। তার এই লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি মোকামতলা হাই স্কুলের খাতা খতিয়ানে অফিস সহায়ক। তবে তিনি শিক্ষক বলে মিথ্যাচার করছেন। এছাড়াও যে জমি বিষয়ে তিনি বলছেন উক্ত জমির বিষয়ে বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক মামলার বিবাদী পক্ষের উপর চিরোস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রায় ডিক্রী রয়েছে। আরও জানা যায়, নিজের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য বিজ্ঞ আদালতের রায় ডিক্রীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, উদ্দেশ্যেমুলক ভাবে উপজেলা প্রশাসনকে জড়িয়ে বিজ্ঞ আদালতের রায় ডিক্রী অবমানা করে বিগত সময়ে তিনিসহ একটি মহল ঝিকরগাছা প্রেসক্লাবে নাটকীয় সংবাদ সম্মেলন, মাছলুট ও বাদিপক্ষ সহ সংবাদকর্মীদেরকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধামকি প্রদান করেন। তার নিজের বা গোত্রের কোন সদস্যদের নামে উক্ত জমির কোন প্রকার অফিসিয়াল কাগজপত্র না থাকার পরও দলীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রভাব বিস্তার করছেন। যার কারণে এলাকা সহ উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে।
শিমুলিয়া ইউনিয়নের মোকামতলা হাই স্কুলের অফিস সহায়ক মোঃ আনিছুর রহমান মিলন বলেন, আমি স্কুলের অফিস সহায়ক। অভিযোগে হয়তো কম্পিউটারের লিখতে ভুল হয়েছে। এছাড়াও সরকার কর্তৃক উক্ত জমি কি আপনাকে লিজ দিয়েছে ? এই সম্পর্কে তিনি বলেন, ওটা গত বছর আমাদের কাছ থেকে খাস কালেকশন করেছে। এবার মামলার জটিলতার কারণে উনি নিতি পারিনি ওই ভাবে আছে। খাস কালেকশন কি বর্তমান এসিল্যান্ড করেছে এই বিষয়ে তিনি বলেন, ওটা আমি কাগজ দেখে বলতে পারবো।
মোকামতলা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনারুল ইসলাম বলেন, আমার খাতা খতিয়ানে আছে তিনি অফিস সহায়ক। অফিস সহায়ক হয়ে শিক্ষকের পরিচয় দিতে পারবে কি না এ বিষয়ে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। কেউ যদি তার পরিচয় গোপন করে তাহলে আমার কি বলার আছে!
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী নূর মোহাম্মদ বলেন, অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগের উপর তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাভিদ সারওয়ারের নিকট আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত জমির বিষয়ে লিজ বা অন্য কোন বন্দোবস্তের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে এখনো এমন কিছু হয়নি। আর থানার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, থানা থেকে যদি আমার নিকট কোন কাগজ আসে তাহলে সেটা দেখে বলতে পারবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা জলমহল ইজারা কমিটির সভাপতি ভুপালী সরকার বলেন, আমি ইজারা কমিটির সভাপতি হিসেবে কোন ইজারা দেয় নাই। উক্ত বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে নিষেধাজ্ঞা মামলা চলমান। নিষেধাজ্ঞা মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পর আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।