Type to search

নয়া পল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

রাজনীতি

নয়া পল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে ডাকা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল হয়নি। তবে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে দলটি। সমাবেশের পর একদল নেতাকর্মীর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটেছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সমাবেশ শেষের পর ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকারের নেতৃত্বে একটি মিছিল শুরু করে। মিছিলটি থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ব্যানারের লাঠি ছুঁড়ে দেওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে। এসময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কয়েকরাউন্ড টিয়ারগ্যাস শেল নিক্ষেপ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিলটি নয়া পল্টন থেকে কাকরাইলের দিকে যাওয়ার সময় মাঝামাঝি পথে দুই পাশের গলিতে অন্তত ১০ মিনিট এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এরপর বিপুল সংখ্যক পুলিশের সদস্য বিএনপির অফিসের দু’পাশে অবস্থান নেয়। এ প্রতিবেদন লেখার সময় দলের নেতাকর্মীদের একটি অংশ কার্যালয়ের ভেতরে ও সামনে অবস্থান করছেন। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা

বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে উপস্থিত যাত্রাবাড়ী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তাহেরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে যাচ্ছিলাম। নাইটিংগেল মোড়ের দিকে একটু এগোতেই দু’পাশ দিয়ে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। আমাদের শরীরে, ঘাড়ে পিঠে লাথি দেয়। যেভাবে ইচ্ছে (পুলিশ) ব্যবহার করেছে। তিনি নিজেও পিঠে-কোমরে আঘাত পেয়েছেন বলে দাবি করেন এই স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা।

পুলিশের পক্ষ থেকে নেতাকমীদের মিছিল থেকে লাঠি নিক্ষেপের অভিযোগ করা হয়েছে, এমন প্রশ্নে তাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘না, পুলিশ প্রথমে আক্রমণ করেছে, লাঠিপেটা করেছে।’

কার্যালয়ে অবস্থান করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

কার্যালয়ে অবস্থান করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

অন্যদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বলা হয়, সমাবেশ থেকে তাদের দলীয় নেতা (মির্জা ফখরুল) মিছিল করবেন না বলে জানালেও তারা একটি মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে কোনও ধরনের উসকানি ছাড়াই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

পরে মতিঝিল জোনের এডিসি এনামুল হক মিঠু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ অনুমতি ছাড়াই  বিএনপির একটি কমর্সূচি ছিলো৷ তারপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সেখানে ছিলাম। কিন্তু সমাবেশ শেষে বিএনপির নেতাকর্মীরা নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশের উপর অতর্কিতে উসকানিমূলক আচরণ করে। পরে আমরা তাদের লাঠিচার্জ করি। ছত্রভঙ্গ করে দেই।

তিনি জানান, সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন পুলিশ আহত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটা এখনও চূড়ান্ত হিসাব হয়নি। তবে ছয়জনের মতো (আহত) রয়েছেন।’

সংঘর্ষের পর অন্তত ৩০ নেতাকর্মীকে আটক করার কথাও জানান তিনি। তবে কত রাউন্ড টিয়ারশেল ব্যবহার করা হয়েছে, তা তিনি জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, এটা হিসাব হয়নি। আরও পর বলা যাবে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি নেতারা

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি নেতারা

এর আগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মিছিল করছি না, সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে আমরা মিছিল করছি না।’

এসময় তিনি অভিযোগ করেন, ‘সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে অন্তত ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।’

এর আগে গত শনিবার (২৩ অক্টোবর) স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় বিএনপি। আজ মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে মিছিলকে কেন্দ্র করে এদিন সকাল ১০টা থেকেই রাজধানীর নয়া পল্টনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও দলটির অঙ্গ- সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভ মিছিল কেন্দ্র করে নয়া পল্টনে বিএনপির অফিসের সামনে একটি ছোট ট্রাকে করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার দাবি’ নিয়ে কমর্সূচি হলেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। তবে শেষমুহূর্তে মিছিল না করার ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব। সূত্র, বাংলা ট্রিবিউন