প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ২০, ২০২৫, ৬:১৩ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ৩, ২০২৫, ১:৪২ এ.এম
নড়াইলে দুর্গাপূজায় নৌকাবাইচ ও গ্রামীণ মেলা দেখতে হাজারো মানুষের ঢল

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মধুমতি নদীতে প্রাণবন্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত গ্রামবাংলার লোকজ ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে হাজারো মানুষের ঢল।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের শিয়রবর মধুমতি নদীতে এ বর্ণাঢ্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে হাজারো মানুষ নদীর তীরে ভিড় করেন এই প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে। শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই যেন ফিরে যান শেকড়ের সেই প্রাণবন্ত গ্রামীণ উৎসবে। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনব্যাপী কাটান নদীর পাড়ে আনন্দঘন পরিবেশে।
প্রতিযোগিতা দেখতে দুপুর থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। শুরুর আগেই নদীর দুই পাড় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। অনেক দর্শনার্থী ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। গ্রামবাংলার জনপ্রিয় এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা সব বয়সী দর্শকের মন জয় করে নেয়।
এবারের প্রতিযোগিতায় নড়াইলসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত চারটি নৌকা অংশ নেয়। প্রতিটি দলে ছিল ৩০-৪০ জন মাঝি, যারা দলবদ্ধভাবে বৈঠা চালিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
নৌকাবাইচের পাশাপাশি আয়োজন করা হয় গ্রামীণ মেলা। মেলায় ছিল হাওয়াই মিঠাই, মাটির পুতুল, খেলনার দোকান, পিঠা-পুলি, বাঁশি, ঢোলসহ নানা ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী ও খাবারের আয়োজন।
প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নৌকাবাইচ আমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি আমাদের শেকড়, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক। নতুন প্রজন্মকে বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।’
বাতাসি গ্রামের রিপন বিশ্বাস জানান, ‘বিশেষ বিশেষ সময়ে এ ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা উচিত। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা পরিবার নিয়ে এসেছি। সবাই অনেক আনন্দ করেছে।’
নৌকা বাইচ ও মেলা দেখতে আসা দর্শনার্থী মিরাজ শেখ বলেন, ‘এবারই প্রথম কোনো নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখলাম। অনেক মজা পেয়েছি। নৌকায় বসে প্রতিযোগিতা দেখার আনন্দই ছিল সবচেয়ে বেশি। এর আগে কোনো প্রতিযোগিতায় এত আনন্দ পাইনি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আহাদুজ্জামান বাটু, সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম, শালনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. মফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কাজী উজ্জ্বল, আয়োজক কমিটির সভাপতি শালনগর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. কামাল শেখ, সাধারণ সম্পাদক তুহিন শিকদারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ কামরুল ইসলাম
মোবাইল নং : ০১৭১০৭৮৫০৪০
Copyright © 2025 অপরাজেয় বাংলা. All rights reserved.