
নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে মাতৃছায়া কৃষি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি সোহাগ মৃধার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে নড়াইলের কালিয়া ও খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী গাজীরহাট বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সামিরুল শেখ, আনোয়ার হোসেন, মো. হিমেল, বুলু মোল্যা, রিপন সাহা, হৃদয় রায় ও জহিরুল ফকির।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, নিয়মানুযায়ী সমিতিটি শুধু কালিয়া উপজেলার হামিদপুর, পেড়লি, পাঁচগ্রাম ও চাঁচুড়ী ইউনিয়নে সদস্য তৈরির মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করতে পারবে। অথচ সমিতির সভাপতি খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষের মাঝে ঋণ দিয়েছেন।
তারা বলেন, সোহাগ ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে উচ্চহারে সুদ নেন। দৈনিক এবং সাপ্তাহিক ঋণ দিয়ে কিস্তি আদায়ের সময় কোনো সদস্য টাকা দিতে না পারলে তাকে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং নারীদের কুপ্রস্তাব দেন৷ এছাড়াও অনেকসময় কিস্তির টাকা দিলেও সদস্যের বইয়ে তা উত্তোলন হয় না। আওয়ামী লীগের আমলে প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্য থাকায় কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। এক ব্যক্তিকে লোন দিয়ে দ্বিগুন কিস্তি আদায় করেছিল সোহাগ। পরে ধরা পড়ার পর সালিশ-বৈঠকে সেই টাকা ফেরত দেন। সোহাগের থেকে ঋণ নিয়ে আওয়ামী লীগের আমলে বেশ কয়েকজন এলাকায় ছাড়া হয়েছে। আমরা চাই, মানুষকে নিঃস্ব করা এই সমিতি বন্ধ করা হোক। সোহাগের ভয়ে যারা এলাকা ছাড়া হয়েছে, তারা নির্ভয়ে যেন বাড়ি ফিরতে পারে।
মানববন্ধনে সামিরুল শেখ বলেন, “আমাদের একটাই দাবি, সোহাগের বিচার হোক। সে বিগত দিনে মানুষকে অত্যাচার ও জুলুম করেছে। এখন আর সেই সুযোগ নেই।”
এসব অভিযোগের মধ্যে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন সোহাগ মৃধা। তিনি বলেন, ”সামাজিক দিক বিবেচনা করে দিঘলিয়া উপজেলার অনেককে ঋণ প্রদান করেছিলাম। এটার জন্য আমি দুঃখিত। ওখানে আর লোন দিব না।”
তবে কিস্তি আদায়ে চাপ প্রয়োগ, গালিগালাজ করা, নারীদের কুপ্রস্তাব ও অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। তার দাবি, অন্যান্যদের তুলনায় তার সমিতিতে সুদের হারও কম। মূলত, তার ব্যাবসায়িক সহযোগী সামিরুলের সঙ্গে পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জের ধরে আমার বিরুদ্ধে মানুষকে শিখিয়ে দিয়ে এসব মানববন্ধন ও অভিযোগ করাচ্ছে।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালিয়া উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক প্রশান্তু কুমার দাস বলেন, ওই সমিতির নামে আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে