ব্যাংকগুলোর আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে ডলারের সর্বোচ্চ দাম কত হবে তা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এখন থেকে প্রবাসীরা দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা দেবে ব্যাংক। সঙ্গে সরকারের আড়াই টাকা প্রণোদনা যোগ হলে সেটি হবে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
এছাড়া বাণিজ্যিক রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিল নগদায়ন হবে প্রতি ডলার ৯৯ টাকায়। রেমিট্যান্স আহরণ ও রপ্তানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় (ওয়েট অ্যান্ড এভারেজ) খরচ হবে ১০৩ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে সর্বোচ্চ এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করতে পারবে ব্যাংকগুলো। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে এ দর কার্যকর হবে।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাফেদার চেয়ারম্যান এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. আফজাল করিম, এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেনসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।
বৈঠক শেষে সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিম বলেন, বাফেদা ও এবিবি যৌথভাবে এ বৈঠক করেছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য দেশের সবগুলো ব্যাংকের মানি এক্সচেঞ্জ রেট যেন এক হয়। ডলারের সংকট ও বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখানে বাফেদা ও এবিবির সব সদস্য একমত হয়েছি যে এখন প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ ডলার রেট হবে ১০৮ টাকা। বাণিজ্যিক রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিলের ক্ষেত্রে রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৯ টাকা। এটা ফিক্সড। এ রেট আগামীকাল থেকে সবাই কার্যক্রর করবে।
তবে রেট কিছুদিন পরপর পরিবর্তন হবে বলে জানিয়েছেন এবিবি ও বাফেদার নেতারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই রেট পর্যবেক্ষণ করবে এবং নিয়মিত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে তথ্য উপাত্ত বিনিময় করবে।
আমদানি বেড়ে যাওয়া ও আশানুরূপ প্রবাসী আয় না আসায় দেশে মার্কিন ডলারের চরম সংকট সৃষ্টি হয়। ফলে দিন দিন বাড়তে থাকে ডলারের দাম। অপরদিকে ডলারের বিপরীতে পতন হয় টাকার মান। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে ৯৫ টাকা দরে। গত বছরের আগস্টে যা ছিল ৮৫ টাকা।
তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ৯৫ থেকে ৯৬ টাকা ডলারের মূল্য ঘোষণা দিলেও আদমানি পর্যায়ে ডলারের দাম নিচ্ছে ১০১ থেকে ১০৬ টাকা। আর নগদ ডলার বিক্রি করছে ১০৬ থেকে ১০৮ টাকা। খোলা বাজারে ডলারের দাম ১১৪ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এর আগে দেশে খোলা বাজারে ডলার চলতি বছরের ১০ ও ১১ আগস্ট নগদ ডলার ১২০ টাকায় উঠেছিল।
এদিকে গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভও ৩৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১৭৩ কোটি ডলারের বিল পরিশোধের পর গত বৃহস্পতিবার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭০৬ কোটি ডলার (৩৭ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার)। গত বছরের শেষের দিকে রিজার্ভ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার পর্যন্ত উঠেছিল।
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ কামরুল ইসলাম
মোবাইল নং : ০১৭১০৭৮৫০৪০
Copyright © 2025 অপরাজেয় বাংলা. All rights reserved.