
আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা : যশোরের ঝিকরগাছার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ভুপালী সরকারের ঝিকরগাছা উপজেলার কার্যক্রম শেষ করে তার নিজ দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন। এছাড়াও একই সাথে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলা থেকে বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, যশোরে দায়িত্বভার গ্রহণ করে রবিবার (০৯ নভেম্বর) ঝিকরগাছা উপজেলার নবাগত নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করছেন মোছা. রনী খাতুন।
ভূপালী সরকারের জন্ম সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামে। বাবা নিমাই সরকার পেশায় কৃষক এবং মা প্রমীলা সরকার গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি বড়। ২০১১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ২০১২ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর জনতা ব্যাংকে নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি শুরু করেন। ৩৫তম বিসিএস ক্যাডারে (প্রশাসন) ২০১৭ সালে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে আইসিটি, এলএও এবং আরডিসি শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২১ সালে তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এলএও এবং আরডিসি পদে যোগ দেন। এরপর খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকে ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব শুরু করে অফিসার হিসেবে নয় একজন সচেতন মানুষ হিসেবে উপজেলায় পরিচিতি পেয়েছেন। তার স্বামী তপন কুমার সরকার কলেজ শিক্ষক এবং দুই পুত্র সন্তানের জননী। রবিবার (০৯ নভেম্বর) তার দায়িত্ব হস্তান্তর করে তার পরবর্তী কর্মস্থল যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ভুপালী সরকার।
অপরদিকে মোছা. রনী খাতুন ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করে ২০২৫ সালের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বিগত ৬ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এবং ০৯ নভেম্বর অপরাহ্নের পর নবাগত ঝিকরগাছার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন এবং ১০ নভেম্বর বিকাল হতে চলতি দায়িত্বে ধারাবাহিকতা শুরু করেছেন। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকালে তার নিজেস্ব কার্যালয়ে আলাপচারিতা মাধ্যমে জানা যায়, তিনি রাজশাহী কালেক্টরেটে কমিশনার হিসেবে ২০১৭-২০ পর্যন্ত, নাটোর সদরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে ২০২০-২২ এবং মেহেরপুর ডিসি অফিসে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে ২০২২-২৪ দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্বামী সাতক্ষীরার উপ পরিচালক (পাসপোর্ট) মো. আজমল কবির ও দুই পুত্র এবং এক কন্যা সন্তানের জননী। তিনি শ্যামনগর পৌরসভার জন্য সুপেয় পানিসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং ময়লা আবর্জনা ফেলার ভাগাড় তৈরি, যমুনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা এবং পরিবেশ সুরক্ষার উদ্যোগ গ্রহন ছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন মালঞ্চ এবং খোলপেটুয়া নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ জনস্বার্থে অসংখ্য জনহিতকরণ কাজ করেন সবার প্রিয়পাত্রে পরিণত হন। এর আগে তুমুল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলাকালে নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই বিএনপি’র বিবাদমান দু’পক্ষের ইট বৃষ্টির মধ্যে অবস্থান নিয়ে দৌড়ে সংঘর্ষ ঠেকিয়ে তাকে নিয়ে দেশজুড়ে আলোচিত হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, এই দুই কর্মকর্তার উপর সরকারের অর্পিত দায়িত্বের বিষয়ে প্রাক্তন কার্যালয় এলাকায় সধারণ মানুষ সহ সর্বস্তরের জনগণ তাদের বদলী ঠেকাতে রাস্তায় নেমে আসেন। যেটা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় তারা উভয়ে তাদের জীবনে সততা, দয়া, সহমর্মিতা এবং অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব প্রদর্শন করে অন্যদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। এই ধরনের মানুষেরা তাদের চারপাশের পরিবেশ এবং সমাজের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিজের স্বার্থের চেয়ে অন্যের স্বার্থকে বড় করে দেখেন এবং সবসময় ন্যায় ও সত্যের পথে অবিচল থাকেন। এছাড়াও, ভালো কর্মকর্তা ও ভালো মানুষ হিসেবে সবসময় হাসিখুশি থাকেন এবং অন্যদেরও হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করেছেন।

