Type to search

ছয় প্রেত্মার ভয়ে গ্রাম শূন্য

আন্তর্জাতিক

ছয় প্রেত্মার ভয়ে গ্রাম শূন্য

আস্ত একটা গ্রামজুড়ে ভর করছে ‘অশরীরী আত্মারা’। আর সেই ‘অশরীরী আত্মাদের’ ভয়ে সুনসান পুরো গ্রাম। গ্রামটির বাড়িতে বাড়িতে ঝুলছে তালা। কারোরই দেখা মেলে না এই গ্রামে।

গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা বাসিন্দাদের ভীতিকর উচ্চারণ, ওই গ্রামে থাকলে মানুষকে গিলে খেয়ে নেয় অশরীরী আত্মারা। তাদের খপ্পরে পড়ে একের পর এক মানুষ মারা গেছে ওই গ্রামে। সেই আতঙ্কে ওই গ্রামটি আজ জনশূন্য।

পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার সুখানদীঘির বাসুদেবপুর গ্রাম। মালদহ শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার যাওয়ার পর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে নারায়ণপুর গ্রাম। সেখান থেকে ভেতরে আরো তিন কিলোমিটার গেলে সুখানদীঘি। সেই সুখানদীঘি থেকে খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট পেরিয়ে আরো এক কিলোমিটারের মতো গেলে সোনাঝুড়ি মোড়। সেই মোড় পেরিয়ে পাঁচপুকুর গ্রামের পাশেই রয়েছে বাসুদেবপুর গ্রাম।

এই গ্রামটি আজ কথিত অশরীরী আত্মার ভয়েই জনশূন্য। স্থানীয়দের ভাষ্য, প্রায় ২৫ বছর আগে এই সুখানদীঘির বসুদেবপুর গ্রামে ডাইনি সন্দেহে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল একই পরিবারের ছয়জনকে। সেসব মানুষই আজ গ্রামে অশরীরী আত্মা হয়ে দাপিয়ে বেড়ায়।

মানুষের বিশ্বাস, একই পরিবারের ৬ জনকে কুপিয়ে খুন করার পরই গ্রামে ঘটতে থাকে একের পর এক অঘটন। ৬ জনকে খুন করার এক মাসের মধ্যেই এই গ্রামে ৬ জনের মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই মানুষের মনে হতে থাকে, এই গ্রামে থাকলে মরতে হবে। কেউ কেউ দাবি করেন, রাতে গ্রামে আর্তচিৎকার, কান্নার আওয়াজ, ধুপধাপ পায়ের শব্দের মতো নানা ধরনের বিদঘুটে আওয়াজ পাওয়া যায়।

একসময় গ্রামে ৩০টি পরিবার ছিল। এখন গ্রামে ঢোকার মুখে মাত্র তিনটি পরিবার থাকে। বাকিরা সবাই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। গ্রামে যাঁদের বাড়িঘর আছে, তাঁরা কদাচিৎ দিনের বেলায় যান, রাতে কেউ গ্রামের পথ মাড়ায় না বলেই জানান স্থানীয়রা।

তবে দীর্ঘদিন ধরে খালি পড়ে থাকা ভুতুড়ে এই গ্রামটি নিয়ে এবার পরিকল্পনা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। মালদহ জেলার জেলা প্রশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘অন্ধবিশ্বাসের কারণে বাসুদেবপুর গ্রামটি আজ জনমানবশূন্য। আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। গ্রামের বাসিন্দাদের ভয় কাটিয়ে যেন আবারও ওই গ্রামে বসবাস করানো যায়, সে জন্য সব রকমের পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *