চৌগাছা প্রতিনিধি
যশোরের চৌগাছায় পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের কিল ঘুষিতে হৃদরোগী শওকত আলী খান (৫০) মৃতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল নিহতের বড় ছেলে জুয়েল রানা চৌগাছা থানায় ৩০২ ধারায় মামলা করেন। যার নম্বর-১০।
মামলার দুই আসামী পুলিশ হেফাজতে থাকা গ্রামের নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী পলি পারভীন (৪০) ও তাঁর ছেলে ইমরান হোসেনকে (২২) গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে রেবাবার বিকেল সাড়ে চারটায় এ রিপোর্ট লেখার সময় শওকত আলীর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামে নিয়ে দাফনের প্রস্তুতি চলছিল।
গত শনিবার (২০নভেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী পলি পারভীনের সাথে কথাকাটাকাটির সময়ে কিল-ঘুষিতে পড়ে গিয়ে আগে থেকেই হৃদরোগে অসুস্থ শওকত আলী মারা যান বলে পরিবারের অভিযোগ।
লিখিত এজহারে নিহতের ছেলে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পলি ও ইমরানের সাথে আমাদের বিরোধ চলছিল। আমার চাচি শাহিদা বেগমের নিকট পলি পারভীনের ১৯০০ টাকা ও ৭ কেজি চাল পাওনা এবং পূর্ব শত্রæতাকে কেন্দ্র করে আমার বাবা শওকত আলী খানের প্রতি আক্রোশ পোষণ করে আসছিল। এর জেরে ২০ নভেম্বর (শনিবার) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে গ্রামের সেলিমের বাড়িতে আমার বাবা নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করার সময়ে তাঁকে উস্কানিমূলক কথাবার্তা, অশ্লীল গালিগালাজ ও মারপিট করতে উদ্বত হয় এবং ভয়ভীতি-হুমকি প্রদান করে। আমার বাবা তাঁদের অশ্লীল গালাগালি ও হুমকিতে ভীত হয়ে কাজ বন্ধ করে বাড়ি চলে যায়। বেলা ১২ টার দিকে সেলিমের বাড়ির সামনে রাস্তার উপর পৌঁছালে আসামীদ্বয় (পলি ও তাঁর ছেলে ইমরান) আমার বাবাকে আবারও গালাগালিসহ কিল-ঘুষি মারে। তখন তিনি অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। সংবাদ পেয়ে আমিসহ আমার ভাই, চাচা ও পাশর্^বর্তী লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লিখিত অভিযোগে তিনি আরও বলেন, আমর বাবা হৃদরোগী জানা সত্বেও আসামীদ্বয় ইচ্ছাকৃতভাবে আমার তঁকে গালাগালি ও হুমকি প্রদানসহ কিলঘুষি মারলে আমার পিতার মৃত্যু হয়।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, এঘটনায় নিহতের ছেলে জুয়েল রানা ৩০২ ধারায় মামলা করেছেন। সে মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া পলি পারভীন ও তার ছেলে ইমরানকে গেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত নিহতের বড়ভাবী শাহিদা বেগম ও পলি পারভীন দুজনেই নারী ইউপি সদস্য প্রার্থী ছিলেন। পলি শাহিদার কাছে পূর্বে নেয়া ১৯০০ টাকা ও ৭ কেজি চাল পেতেন। সেই টাকা চাওয়া কেন্দ্র করে কথাকাটাকাটি ও গোলযোগে শওকতের মৃত্যু হয়। এটাকে স্থানীয় কেউ কেউ নির্বাচনী সহিংসতা বললেও নিহতের বড় ছেলে মুঠোফোনে জানিয়েছিলেন, তাঁর চাচি সাদিয়া খাতুন ও পলি পারভীন দুজনেই ইউপি সদস্য প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। সাদিয়ার কাছে পলির ১৯০০ টাকা ও ৭ কেজি চাল পাওনা ছিল। সেই টাকা ও চাল চাওয়া কেন্দ্র করে ঘটনা ঘটলেও এটা নির্বাচনি সহিংসতা নয়। এমনকি লিখিত এজহারের কোথাও তিনি পলি ও সাদিয়ার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেননি।
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ কামরুল ইসলাম
মোবাইল নং : ০১৭১০৭৮৫০৪০
Copyright © 2025 অপরাজেয় বাংলা. All rights reserved.