Type to search

চৌগাছায় পরকীয়া প্রেম করতে গিয়ে বস্তাবন্দি লাশ হলো প্রেমিক

যশোর

চৌগাছায় পরকীয়া প্রেম করতে গিয়ে বস্তাবন্দি লাশ হলো প্রেমিক

শ্যামল দত্ত,স্টাফ রিপোটার,  চৌগাছা (যশোর) থেকে::
যশোরের চৌগাছায় তুলে নেয়ার তিনদিন পর বিপুল হোসেন (৩৮) নামে এক যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে মা এর সাথে পরোকিয়া প্রেম করায় প্রেমিকার ছেলে ও জামাই খুন করেছে তাকে।  শুক্রবার বেলা ১১টায় এলাকার একটি বাওড় থেকে বিপুলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

বিপুল হোসেন উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের বড় কাকুড়িয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত শামসুল হোসেনের ছেলে। আর পরকীয়া প্রেমিকা ফুলবানু (৩৫) একই গ্রামের মালেশিয়া প্রবাসী আবু সামার স্ত্রী।
জানা গেছে বুধবার বেলা ১০টার দিকে  বাড়ি থেকে একটি মটরসাইকেলে করে বিপুলকে   তুলে নিয়ে আসে ফুলজানের মেয়ের জামাই রফিকুল ইসলাম। এরপর শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে চৌগাছা থানার পুলিশ উপজেলার  বেড়গোন্দিপুর বাওড় অফিস সড়ক থেকে ওই ব্যক্তির বস্তাবন্দি দুর্গন্ধযুক্ত লাশ উদ্ধার করে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার শিমুল হোসেন ও নিহতের ভাই লিটন হোসেন বলেন গত বুধবার সকাল দশটার দিকে আবু সামার মেয়ের জামাই রফিকুল ইসলামকে গরু কেনার নাম করে বিপুল হোসেনকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়। আবু সামার স্ত্রীর ফুলবানুর সাথে বিপুলের দির্ঘদিন ধরেই পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩টা পর্যন্ত বিপুলের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে রিং বাজলেও কেউ ফোন ধরেনি। এসময়ে বিপুলের খোঁজ না পেয়ে আবু সামার জামাই রফিকুলের নিকট বিপুলের পরিবারের লোকজন ও গ্রামের লোকজন জানতে চাইলে সে বলে গরু কিনতে পুড়াপাড়া বাজারে গেছে। রাতেও বাড়িতে না ফিরলে আবারো তারা রফিকুলের নিকট জানতে চাইলে সে বলে হয়ত চৌগাছায় আছে।
এরপর বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ইউপি সদস্য শিমুল হোসেনসহ পরিবার চৌগাছা থানায় গিয়ে নিহতের ভাই লিটন হোসেন বাদি হয়ে পরকীয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে রফিকুলের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগে ডায়েরি করার জন্য লিখিত অভিযোগ দেন। সে সময়ে অফিসিয়াল কাজে থানার ওসি রিফাত খান রাজীব চুয়াডাঙ্গায় জেলায় ছিলেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক তখনই কারো বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ না দিয়ে আরো খুঁজাখুজি করার জন্য তাদের পরামর্শ দেন। একইসাথে বৃহস্পতিবার দুপুরেই ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক ওই গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে আসেন। তবে তদন্ত করে আসলেও থানায় জিডি এন্ট্রি করা হয়নি। পরে শুক্রবার ভোররাতে একটি অজ্ঞাত মোবাইল নম্বর থেকে নিহতের শ্বশুর আমজাদ হোসেনের মেবাইলে কল দিয়ে বলা হয় তোমার জামাইয়ের লাশ বেড়গোবিন্দপুর বাওড়ের পাশে রাস্তায় বস্তাবন্দি পড়ে রয়েছে। শুক্রবার খুব সকালেই পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পেয়ে চৌগাছা থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে দুর্গন্ধযুক্ত লাশ বস্তাবন্দী জড়সড় হয়ে যাওয়া লাশ উদ্ধার করে।
চৌগাছা থানার ওসি (তদন্ত) এসএম এনামুল হক মোবাইল ফোনে লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন তাদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমি নিজেই তাৎক্ষণিকভাবে গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে আসি। নিহতের পরিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল প্রশ্নে তিনি বলেন না না তারা কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করতে এসেছিল। আমি তাৎক্ষণিকভাবে গিয়ে তদন্ত করে আসছি। এটাতো ওই দিনেরই ঘটনা। মানে বুধবারেই হত্যা করা হয়েছে। লাশে গন্ধ ছুটে গেছে।
তবে ইউপি সদস্য শিমুল হোসেন জোর দিয়ে বলেন পরকীয়ার ঘটনা বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে রফিকুলের নাম উল্লেখ করে চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। সেসময় আমরা ৪/৫জন থানায় উপস্থিত ছিলাম। ওসি (তদন্ত) বলছেন আপনারা লিখিত অভিযোগ দেননি জবাবে তিনি বলেন উনারা তাহলে আমাদের অভিযোগ এন্ট্রি করেননি। আমরা অবশ্যই লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েই লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছিল।
চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বস্তাবন্দি দুর্গন্ধযুক্ত লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন কিভাবে হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।