শ্যামল দত্ত(যশোর) চৌগাছা থেকেঃ যশোরের চৌগাছায় করোনায় জোসনা রানী (৭০) নামে এক নারী উপজেলা মডেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শুক্রবার ভোরে মৃত্যুর পর হাসপাতালের মেজেতে মরদেহ পড়ে থাকলেও তা নিতে আসেননি তার স্বজন কিংবা স্বজাতির কেউই। এ খবর জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অগ্রযাত্রা টিমকে খবর দেন। তারা ভ্যানে করে লাশটি পৌর শহরের কপোতাক্ষ নদের পাড়ে পান্টিপাড়া মহাশ্বশ্মানে সমাহিত করেন।
অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি হাজী হাসিবুর রহমান বলেন, আমরা করোনা কালিন সময়ে মানুষের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আজ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহাদয় আমাকে জানান হাসপাতালে করোনায় মৃত এক মহিলা নারীর মরাদেহ রয়েছে। দীর্ঘ সময় হাসপাতালের মেজেতে মরদেহ পড়ে থাকলেও তা নিতে আসেননি তার স্বজন কিংবা স্বজাতির কেউই। ফলে আনাদেরকে লাশটি সমাহিত করতে হবে। পরে আমরা ভ্যানে করে লাশটি পৌর শহরের কপোতাক্ষ নদের পাড়ে পান্টিপাড়া মহা শ্বশ্মানে সমাহিত করেছি।
অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহ-সভাপতি করোনা যোদ্ধা আলমগীর হোসেন বলেন, জগত সংসারে কেউ কারো নয়,আজ আবারো তা প্রমানিত হলো, বৃদ্ধা মহিলা মারা যাওয়ার পর তার আত্মীয়-স্বজনরা মৃতদেহের পাশেই আসেননি। অনেকক্ষণ হাসপাতালের মেঝেতে পড়েছিল। আমরা কয়েকজন অগ্রযাত্রা সেচছাসেবক সংগঠনের যুবকরা তাকে সমাহিত করেছি। তবে এ সময় বৃদ্ধার এক ছেলে উপস্থিত থাকলেও তারা মায়ের মরদেহ ¯পর্শ করেননি। এগিয়ে যাননি আত্মীয়-স্বজনরা।
অগ্রযাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান প্রিয় বলেন, 'খবর পেয়ে অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি হাজী হাসিবুর রহমান, করোনা যোদ্ধা আলমগীর হোসেন আলমসহ আমাদের টিমের সদস্য আব্দুর রশিদ রাজু, ফয়সাল আহমেদলাশ ও আমি বৃদ্ধার লাশটি হাসপাতাল থেকে নামিয়ে ভ্যানযোগে মহাশ্মশানে নিয়ে যায়। পরে সদস্যরা লাশের স্নান দিয়ে কাপড় পরিয়ে সমাহিত করি।
এ ব্যাপারে সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোতা মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, ঘটনাটি দুঃখ জনক। আতœীয় স্বজন বা স্বজাতীর কেউ এগিয়ে আসেননি। এমন কি পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে মায়ের মরাদেহ বাড়ীতে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন বৃদ্ধার ছেলেরা। পরে করোনার রোগী হওয়ায় মহাশ্মশান কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসেননি। তবে অগ্রযাত্রা সেচছাসেবক সংগঠনের যুবকরা যারা এ কাজটি করেছেন তাদেরকে আমি সাধুবাদ জানায়।
জোসনা রানী উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের পুড়াপাড়া গ্রামের ক্লাবপাড়ার মৃত সনতোষ কর্মকারের স্ত্রী। তিনি ৮ জুলাই সকালে করোনা নিয়ে চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালে ভর্তি হন।