Type to search

চৌগাছায় এক সংখ্যালঘুর বসতভিটা লিখে নিতে মারপিট

চৌগাছা

চৌগাছায় এক সংখ্যালঘুর বসতভিটা লিখে নিতে মারপিট

চৌগাছা (যশোর)প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছায় বসতভিটা লিখে না দেওয়ায় নারায়ন চন্দ্র পাল (৬০) নামে এক সংখ্যালঘুকে বেদম মারপিট করে আহত করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার স্বরুপদহ ইউনিয়নের তিলকপুর বাজারে।
চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নারায়ন চন্দ্র পাল সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় তিলকপুর বাজারে আশাদুল ইসলামের মুদি দোকানের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম। এ সময় গয়ড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে ফারুক হোসেন, ইসলাম আলীর ছেলে মজনুর রহমান, নুর ইসলামের ছেলে একসের আলী ও আবু সাঈদের ছেলে সুমন রহমান আমার উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা বাঁশের লাঠি, লোহার রড ও চার্জার লাইট দিয়ে আমাকে বেপরোয়া ভাবে পিটাতে থাকে। আমি মাটিতে পড়ে গেলে তারা কিলঘুষি লাথি মারতে থাকে। এ পর্যায়ে আমি হুসহারালে তারা মৃত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে চৌগাছা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আপনাকে মারল কেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উপজেলার গয়ড়া গ্রামে মাত্র একঘর হিন্দু আমার পরিবার। সেখানে আমি স্ত্রী সন্তান নিয়ে সকলের সাথে মিলে-মিশে বসবাস করে আসছি। কিন্তু গেল কয় বছর যাবৎ আমার প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে ফারুক হোসেন, ইসলাম আলীর ছেলে মজনুর রহমান ও নুর ইসলামের ছেলে একসের আলী আমার বসতভিটা দখল করতে নানা ফন্ধি-ফিকির করে আসছে। তারা দাবী করছে আমার বসত ভিটা তাদের নিকট আমি নাকি বিক্রি করতে বায়না স্বরুপ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছি। এমন একটি জাল বায়না নামা ও দেখাচ্ছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গ্রামের মাতুব্বররা বসলেও তারা প্রমান করতে পারেনি। তাই জোর করেই আমার নিকট থেকে আমার বসতভিটা লিখে নিতে চাই। আমি রাজি না হওয়ায় তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে য়ায়। এ ঘটনার জের ধরে তারা আমার উপর হামলা চালিয়েছে।
এ ঘটনায় আপনি মামলা করবেন কি না ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থানায় অভিযোগ করলে ওরা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। গ্রামের লোকজন হাসপাতালে আমাকে দেখতে এসেছিলেন তারা বলেছেন স্থানীয় ভাবে বসে মিটিয়ে দেবেন। দেখি তার কি করেন। না হলে থানায় অভিযোগ দেব।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফারুক হোসেন মোবাইলে বলেন, ভাই আমি আপনার সাথে স্বাক্ষাতে কথা বলবানে, বিষয়টি তেমন কিছুই নয়। তবে ভিটা বাড়ী দখলের কথা জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। আপনারা তাকে মারলেন কেন তখন তিনি বলেন ওকে মারা হয়নি ভান ধরে হাসপাতালে শুয়ে রয়েছে।
এ ব্যাপারে গয়ড়া ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বর শিমুল হোসেন বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় মারা মারির ঘটনা আমার জানা নেই। তবে নারান ও অভিযুক্তদের সাথে গয়ড়া গ্রামের গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা বেশকবার বসেছেন বলে আমি জানি। তবে প্রকৃত ঘটনা কি তা কাগজ পত্র দেখলে বুঝা যাবে। তবে পরে তিনি বলেন, ঘটনা যাই হোক নারায়ন চন্দ্রপালকে এ ভাবে মারা ঠিক হয়নি।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় জমি-জমা নিয়ে গোলযোগের জের ধরে উপজেলার স্বরুপদহ গ্রামের প্রতিবেশী মসলেম আলীর ছেলে আলী হোসেন ও মঈন উদ্দীনের হামলায় আব্দুল খালেক (৬০) তার স্ত্রী কহিনুর বেগম (৫০) ও ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৬) আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তারা মা ও বাবা প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। এ ঘটনায় চৌগাছা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্বরুপদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ার হোসেন বলেন, মারামারির ঘটনায় গয়ড়া গ্রামের নারায়ন চন্দ্রপাল ও স্বরুপদহ গ্রামের শহিদুল ইসলাম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় ভাবে মেটানোর চেষ্টা করছি।