Type to search

চৌগাছার পীর বলুহ (রহ) মেলা না হওয়ার পক্ষে বিশিষ্টজনেরা

যশোর

চৌগাছার পীর বলুহ (রহ) মেলা না হওয়ার পক্ষে বিশিষ্টজনেরা

স্টাফ রিপোটার চৌগাছা (যশোর) থেকে:
যশোরের চৌগাছার “পীর বলুহ (রহ) মেলা” বন্ধ রাখতে সরকারিভাবে অনুমতি না দেওয়ার দিতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন উপজেলার বিশিষ্ট জনেরা।
সারা বিশে^ করোনা মহামারি থেকে বাচতে একের পর এক স্বাস্থ্যবিধি মানতে বিভিন্ন দেশে সরকারি নির্দেশ জারি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও এই করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে সর্বদা স্বাস্থ্যবিধি মানতে সরকারিভাবে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন নির্দেশও জারি করেছে। সে কারনেই উপজেলার লাখো জনগনের জীবন বাচাতে চলতি বছর এই মেলা বন্ধ রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ বিশিষ্টজনেরা।
প্রতি বাংলা সনের ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার চৌগাছা উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের কপোতাক্ষ তীরবর্তী হাজরাখানা গ্রামে ঐতিহ্যবাহি পীর বলুহ দেওয়ানের ওরশের সময় স্থানীয়রা যশোর জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে মেলার আয়োজন করে থাকেন। প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহি এ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসে লাখো মানুষ। অন্য বছরগুলিতে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ৩ থেকে ১৫ দিনও অনুষ্ঠিত হয়েছে এই মেলা।
মেলা আয়োজনের জন্য ইতিমধ্যেই মেলা কমিটি যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর আবেদন করেছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শনিবার এ বিষয়ে কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। গ্রামের মানুষের পাশাপাশি উপজেলার বিশিষ্ট জনেরা চাচ্ছেন এবছর করোনা ভাইরাসের কারনে মেলার অনুমতি যাতে না দেয়া হয়।
এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, করোনা থেকে বাচতে এবং সাধারন জনগনকে বাঁচাতে এ বছর এ মেলার আয়োজন করা সমীচিন হবেনা। মেলা হলে করোনা সংক্রমনের আশংকা থাকবে। মেলা কমিটি একটি আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসক মহোদয় আমার মতামত জানতে চাইলে আমি অনুমতি না দেয়ার পক্ষেই মতামত দেব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাঃ নুৎফুন্নাহার লাকি মনে করেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যে হাজারো মানুষের সমাগম হবে তাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং প্রতিদিন মেলায় আগত হাজারো মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে বাঁচাতেই মেলা বন্ধ রাখা উচিত।
চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এসএম হাবিবুর রহমান বলেন, যে করোনার ভয়ে সরকার এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছেনা। সর্বত্র লোক সমাগম না করতে বার বার নির্দেশ দিচ্ছে। সেখানে মেলা হওয়ার প্রশ্নই আসে না। স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েরা দীর্ঘদিন ঘরে বসে আছে। মেলা হলেই তাদের আর আটকানো যাবে না। তখন এই করোনা উপজেলার সর্বত্র ভয়ঙ্করভাবে প্রভাব বিস্তার করবে। যার ফলে হাজারো মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে। তখন এই দায়দায়িত্ব কে নেবে?
চৌগাছা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহŸায়ক দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, যে করোনার ভয়ে ঈদের জামাত এবং দূর্গা পূজার মতো ধর্মীয় উৎসব পালনে বিভিন্ন বিধিনিষেধ রয়েছে। সেখানে মেলা হবে কেন? মেলা করার বিপক্ষে প্রয়োজন হলে আমরা মানব বন্ধন করে প্রতিবাদ জানাবো।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান বলেন, সরকার অনুমতি দিলে তবেই মেলা হওয়া না হওয়ার প্রশ্ন। করোনা মহামারির কথা মাথায় রেখে সরকারি অনুমতি নির্ভর করবে বলে মনে করেন তিনি।
চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, এখনও মেলার অনুমতি হয়েছে বলে আমার জানা নেই। সরকারিভাবে অনুমতি পেলে’ই মেলা হবে। তার আগে মেলা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
নারায়নপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও অন্যান্য বছরগুলোয় মেলা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেন, আমি চাইনা আমার ইউনিয়নসহ উপজেলাবাসি করোনা রোগে আক্রান্ত হোক। তারপরেও এটা জেলা প্রশাসকের ব্যাপার। তিনি অনুমতি দিলে মেলা হবে নতুবা হবেনা।