Type to search

চৌগাছার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও প্রাণি সম্পদ অফিসে সেবাবঞ্চিত জনসাধারণ

যশোর

চৌগাছার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ও প্রাণি সম্পদ অফিসে সেবাবঞ্চিত জনসাধারণ

শ্যামল দত্ত, স্টাফ রিপোর্টার ,চৌগাছা (যশোর):
যশোরের চৌগাছা উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস ও প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্ধারিত সময়ে অফিসে না আসায় সেবা গ্রহিতারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক সূত্রে এমন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বুধবার সকাল ৯টায় সরেজমিনে অফিস দুটিতে গিয়ে এর সত্যতা মিলেছে। শুধু তাই নয় উপজেলা ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ ওয়াশ ব্লকের কাজ চলমান থাকলেও কোথায় কোথায় কাজ হচ্ছে জানেন নান না জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ইকরামুল কবীর। অন্যদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র গোস্বামী ঠিকমত অফিসে তো আসেনই না। আবার অফিসের স্টাফসহ সেবা নিতে আসা ব্যক্তিদের সাথেও দূর্ব্যবহার করেন তিনি।
অফিস দুটিতে সেবা নিতে আসা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন অফিস দু’টির কর্তাব্যক্তিরা নানা অজুহাতে সপ্তাহে ৩/৪ দিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন। ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন সেবা নিতে আসা লোকজন সেবা না পেয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগিদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলায় কমর্ররত কয়েকজন সাংবাদিক বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত উপজেলার দু’টি দপ্তর পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
সকাল ৯.১৫ মিনিটে উপজেলা প্রণিসম্পদ অফিসে গিয়ে দেখা যায় মেইন গেট তালাবদ্ধ। গেটের সামনে উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের ফিরোজা বেগম নামের একজন বিধবা নারী তার একটি অসুস্থ ছাগল নিয়ে দাড়িয়ে আছেন। আরো ৫ মিনিট পরে অফিসের ল্যাব টেকনিশিয়ান নওশাদ আলীকে আসতে দেখা যায়। তিনি অফিসের ল্যাব টেকনিশিয়ান পরিচয় দিয়ে সংবাদ কর্মীদের কাছে পরিচয় জানতে চান। পরিচয় জানতে পেরে অফিসে বসে কথা বলার আহ্বান জানান তিনি। উপজেলার এই দপ্তরের প্রধান প্রভাষ চন্দ্র গোস্বামী কখন আসবেন জানতে চাইলে বলেন, স্যারের মিটিং আছে। আজ আসবেন না। অন্যরা কখন আসবেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন হয়ত একটু দেরি হচ্ছে। তবে ৯.৩০ পর্যন্ত অপেক্ষা করেও অফিসের অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। প্রভাষ চন্দ্র গোস্বামীকে একাধিকবার তার ব্যবহৃত সেলফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
একইভাবে দেখা যায় উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌল অধিদপ্তরের অফিসও তালাবদ্ধ। সকাল ৯.২০ মিনিটে দপ্তরের অফিস সহায়ক আব্দুল হাফিজকে অফিসের তালা খুলতে দেখা যায়। সংবাদকর্মী জানতে পেরে তিনি অফিসে প্রবেশ করেই অপ্যায়ণ করানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সকাল ৯.৩০ মিনিটে অফিসে প্রবেশ করেন দপ্তরটির প্রধান সহকারী প্রকৌশলী ইকরামুল কবির। তিনি বলেন ভাই আজ একটু দেরি হয়েছে। জানা যায় অফিসটিতে জনবল রয়েছে ৭ জন। অন্যরা কখন আসবেন? জানতে চাইলে ইকরামুল কবীর বলেন, অন্যরা ফিল্ডে আছেন। চৌগাছা উপজেলার ১৪ স্কুলে ওয়াশ ব্লকের কাজ চলছে। যার বাস্তবায়ন ব্যয় প্রায় দুই কোটি টাকা। কোন কোন স্কুলে কাজ চলছে জানতে চাইলে তিনি ২/৩টির নাম বলতে পারেন। এ বিষয়ে অন্য তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কম্পিউটার অপারেটর এখনো আসেননি। আসলে বলতে পারবো। কম্পিউটার অপারেটরও কি ফিল্ডে? প্রশ্নে তিনি বলেন না। উনি এখনি আসবেন। তবে সকাল ১০ টা পর্যন্ত অফিসে কাউকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।
এ ব্যাপারে পরে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র গোস্বামী মোবাইল ফোনে বলেন কে, কবে, কখন আফিসে আসছেন আপনারা কি দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখন? আমি যেদিন সকাল ৯ টার আগে যায় সেদিন তো দেখেননা। আমি আজ মিটিংয়ে আছি। সরকারি নির্দেশনা আছে কর্মস্থলে যোগদান করে মিটিংয়ে উপস্থিত হতে হবে। এ বিষয়ে তিনি বলে এরকম কোনো কিছু আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন প্রত্যেকটি দপ্তরের দায়িত্ব সেই দপ্তরের প্রধানের। অফিস টাইমে সরকারি কোন অফিস তালাবদ্ধ রাখা ঠিক নয়। এমনটি হয়ে থাকলে উপজেলা পরিষদের আগামী উন্ননয়-সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *