
চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি:
যশোরের চৌগাছায় জোরপূর্বক ধর্মান্তরের অভিযোগকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর এলাকায় শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
জানা যায়, উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের মাকাপুর গ্রামের আজানুর রহমান ওরফে আজু এবং তার স্ত্রী নাছিমা বেগম প্রতারণার মাধ্যমে গ্রামের কয়েকজন কিশোরকে ঢাকায় নিয়ে যায়। গত ১৮ অক্টোবর সকালে পিকনিকে যাওয়ার কথা বলে তারা প্রায় ১০ জন কিশোরকে গাজীপুরের ভাদুন ও আশপাশের এলাকায় নিয়ে যায়।
অভিযোগ অনুযায়ী, সেখানে নিয়ে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটি খ্রিস্টান ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করানো হয়। প্রোগ্রাম শেষে ১৯ অক্টোবর রাতে তারা বাড়িতে ফিরে আসে। বিষয়টি প্রথমে জানতে পারেন নওদাপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম। তিনি কিশোরদের বক্তব্য ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড করলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওটি চৌগাছা বার্তা ও মেজবাহ উদ্দিন যশোরী নামের দুটি পেজে প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “ভিডিওটি দেখে আমি রিপোস্ট করি। সেখানে দেখা যায়, চৌগাছার কয়েকজন তরুণকে গাজীপুরে নিয়ে গিয়ে পুকুরে ডুব দিয়ে পবিত্র করার নাম করে খ্রিস্টান ধর্মে রূপান্তরের চেষ্টা করা হয়। এটি ধর্মীয় ষড়যন্ত্রের অংশ। ইসলামের শত্রুদের এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে আলেম সমাজ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানান তিনি।”
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি খ্রিস্টান সংগঠনের মিটিং এর ১০০ জনের একটি তালিকায় চৌগাছার বাবলুর রহমানের নাম প্রথমে রয়েছে।
অন্য একটি সূত্র জানায়, প্রায় এক যুগ ধরে চৌগাছা শহরের যশোর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ‘নিউ সিংহঝুলী সাইকেল স্টোর’-এর উপরের তলায় দীপ্ত সমাজকল্যাণ সংস্থা নামে একটি অফিস পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে অভিযুক্তদের নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে অভিযুক্ত স্বামী-স্ত্রীকে কালিমা পাঠ করিয়ে নতুন করে বিবাহ পড়ানোর একটি ভিডিওও ভাইরাল হয়।
সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের মাকাপুর গ্রামের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, “ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর রবিবার সকালে আশপাশের আলেমরা আজু ও তার স্ত্রীকে শরিয়ত মোতাবেক পুনরায় বিবাহ পড়ান এবং কালিমা পাঠ করান।”
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, “এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।”

