চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু, চুয়াডাঙ্গা থেকে
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে গরম হয়ে উঠছে চুয়াডাঙ্গার নিত্যপণ্যের বাজার। এরই মধ্যে কমেছে বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। ফলে দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। অপরদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে মাংস, পেঁয়াজ, মসলা, খেজুর ও ছোলার ডালসহ অন্যান্য ডালের। তবে মাছ ও সবজির বাজার খানিকটা নাগালের মধ্যেই রয়েছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গা শহরের নীচের বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
জানা গেছে, গেল দুই সপ্তাহ ধরে বাজারে মাংসের দাম স্থিতিশীল থাকলেও গতকাল নিচের বাজারে গরুর মাংসের দাম ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে কেজি ৭০০ টাকা দরে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ বাড়িয়েছে বিক্রেতারা। খাসির মাংসও ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম অপরিবর্তিত আছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের পন্য ব্রয়লার, সোনালি ও লেয়ার মুরগির বাজারে। তবে দেশী মুরগির দাম আকাশ ছোঁয়া। এখনই বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজিতে। অস্বস্তি দেখা দিয়েছে প্যারিস মুরগির দামেও। মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে মুরগির দাম বাড়তি। আবার চাহিদা মতো মুরগি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাড়ছে মুরগির দাম।
এদিকে স্বাভাবিক রয়েছে মাছ ও ডিমের বাজার। তবে এখন সব ধরনের সবজির বাজার দর স্বাভাবিক থাকলেও সামনে কয়েকদিনের মধ্যে সবজির বাজার চড়া হতে পারে, বলছেন সবজি বিক্রেতারা।
গত এক মাস ধরে কোনভাবেই যেন কমছে না পেঁয়াজের ঝাঁঝ। সেই একই দামে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করা হচ্ছে। গতকাল বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়েছে ১২০ টাকা কেজি দরে। ফলে সাধারণ ক্রেতারা বাজারে এসে দামের কাছে হার মানছে। পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে দাম বেড়েছে রোজার পণ্যে। এক কেজি ছোলার ডাল এখন ২০ বাড়তি হয়ে ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর অন্যান্য সব ধরনের ডালের দাম বাড়ার কারণে বেশনের দামটাও যেন আকাশ ছোঁয়া। এক কেজি বেশনে ২০ টাকা বাড়তি হয়ে কেজিতে তার দাম ৯০ টাকা। হঠাৎ করে দাম চড়া মসলার বাজারে। সব ধরনের মসলার বাজার কেজিতে ২০ টাকা বাড়তি। আর প্যাকেটজাত সব ধরনের মসলায় ৫ টাকা বাড়তি। তবে সব থেকে বেশি দামে পাল্লা দিচ্ছে লবঙ্গের দাম। এখন এক কেজি লবঙ্গের দাম ১ হাজার ৬০০ টাকা। আবার রোজার বিশেষ পণ্য সব ধরনের খেজুরের দামে কেজিতে ১০০ টাকা বাড়তি। তবে দাম খানিকটা কমেছে সয়াবিনের লুজ ও বোতলজাত তেলের। দাম কম চিনির বাজারেও। আর অন্যান্য সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই যাচ্ছে। কমার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের বাজারে।
বাজারে আসা এক ক্রেতা আলাউদ্দিন বলেন, আর কয়দিন পর রোজা। তার আগেই যে হারে বাজারে দাম বাড়ছে সব জিনিসের। বিশেষ করে দাম বাড়তি ছোলার ডাল বেসন মাংস মসলার এবং আরো অনেক পণ্যের। বাজারে জিনিসের দাম কি কোনো ভাবেই কমার পরিস্থিতি নেই। না কি এই ভাবে দাম বাড়তেই থাকবে। দামের কাছে আমরা সাধারণ ক্রেতারা জিম্মি হয়ে যাচ্ছি। সব থেকে বড় কথা যে বাজারে কোরো পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হয়না।
আরেক ক্রেতা আব্দুল আজিজ বলেন, আবার সেই আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। আর পেঁয়াজের দাম তো কমছেই না। এ যেন দামের পাল্লা চলছে। জরিমানা ও বাজার মনিটরিং সবই করছে তাও দাম কমছে না জিনিসের।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সজল আহম্মেদ বলেন, নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম তদারকি করা হচ্ছে। রমজান মাস আসার আগেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রোজার বিশেষ কিছু পণ্যে দাম যাতে ঠিকঠাক থাকে সেই ব্যাপারে নজরদারি রাখা হচ্ছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ কামরুল ইসলাম
মোবাইল নং : ০১৭১০৭৮৫০৪০
Copyright © 2025 অপরাজেয় বাংলা. All rights reserved.