
চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু, চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা
চুয়াডাঙ্গায় স্থাপনা করা বেশির ভাগই সিসি ক্যামেরা অকেজো ও নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে । ফলে শহরে বাড়ছে চুরি ও ছিনতাই এবং মারামারির ঘটনা। গেল এক বছর আগে জেলা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে শহরের গুরুত্বপুর্ণ স্থানে বসানো হয় সিসি ক্যামেরা। পরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ক্যামেরা এখন ভেঙেচুরে ঝুলে রয়েছে। বেশির ভাগই সিসি ক্যামেরার যান্ত্রিক ত্রুটি ও ক্যাবল নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। তবে জেলা পুলিশের দাবি, শহরের সিসি ক্যামেরা মেরামতের কোন বাজেট দেয় না সরকার। জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা মেরামত ও স্থাপনা করা হয়।
জানাগেছে, জেলার নিরাপত্তা বাড়ানো ও শহরটি নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা শহরের ৩৫ টি সিসি ক্যামেরা বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়। গেল বছরের ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান হয় ৫ আগস্ট। ওই দিন শহরের বেশ কিছু স্থানের ১০ থেকে ১৫ টি সিসি ক্যামে ভেঙে দেয় ছাত্র জনতা। এরপর থেকে সিসি ক্যামেরাগুলা অরক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। সিসি ক্যামেরাগুলা নিয়ন্ত্রণে রাখতো চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ। এরপর অনিয়ন্ত্রণের অভাবে প্রায় সবকটি ক্যামেরার ক্যাবল নষ্ট ও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়। এসব সিসি ক্যামেরাগুলা পরে মেরামত করা সম্ভব হয়নি। ফলে জেলা শহরের সবকটি সিসি ক্যামেরাগুলা এখন অচল আর অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে শহরের অলিগলিতে মারামারি, ছিনতাই ও চুরি ঘটনা ঘটেই চলেছে। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশ হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। সিসি ক্যামেরা অচল হওয়ায় চোর ডাকাত আসামিদের সনাক্ত করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার বলে মনে করেন জেলা পুলিশের সদস্যরা। জেলার সুশিল সমাজের ব্যক্তিবর্গদের দাবি, শহরের সবকটির গুরুত্বপুর্ণ স্থান ও অলিগলি এবং পাড়া মহল্লায় পুনরায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হোক। সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণে রাখলে শহরের মানুষের নির্বিগ্নে চলাচল ও বসবাসের উপযোগী হয়ে উঠবে বলে জানান সংশ্লিষ্ঠ ব্যক্তিরা।
এদিকে জেলা পুলিশের দাবি, চুয়াডাঙ্গা শহরের স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার যান্ত্রিক ত্রুটির মেরামতের বাজেট বহন করে না। তবে পুনরায় সিসি ক্যামেরাগুলা মেরামতের জন্য জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের সহযোগিতায় কাজ করবে পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গা শহরের কাটপট্রি এলাকার বাসিন্দা তানজিলা মনোয়ার মিনি বলেন, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরাগুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। এর ফলে কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা ক্যামেরার সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গায় স্থাপিত সিসি
ক্যামেরাগুলো সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে গেছে। নষ্ট সিসি ক্যামেরার কারণে অপরাধ বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শহরের আরেক বাসিন্দা হাসমত আলী বলেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে ক্যামেরাগুলো অকেজো হয়েছে। নিজেদের স্বার্থে অনেকে ক্যামেরা স্থাপন করলেও শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নেই। তাই পুরো জেলা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার জোড় দাবি। এমনকি এসব এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নানা ধরনের অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা প্রয়োজন।
চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধী শনাক্তে সিসি ক্যামেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সিসি ক্যামেরাগুলো অকেজো হয়ে পড়ায় নতুন করে ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেয়ার কার্যক্রম চলছে। স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার মেরামত ও কেনার খাত নেই। জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা মেরামত ও স্থাপনা করা হবে।