চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিককে তুলে নেওয়ার হুমকি দিলেন বিএনপি নেতা

চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু, চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় সংবাদ সংগ্রহের জেরে দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি ও দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল হক পিপুলকে প্রাণনাশ ও তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।
মুঠোফোনে ভুক্তভোগী সাংবাদিককে এ হুমকি দেন তিনি। অভিযুক্ত নাহারুল ইসলাম মাস্টার দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয় কমিটির সদস্য।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর কাঠালতলা এলাকায় প্রায় ৩ বিঘার একটি জমির মালিকানা নিয়ে শাহিন আলী ও শাহাজাহান মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনায় দু’পক্ষের মধ্যে আদালতে একাধিক মামলা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। মামলা পর ঘটনাস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করে চুয়াডাঙ্গা আদালত এ সংক্রান্ত একটি সাইনবোর্ড লাগিয়েছিলেন।
এরপর শাহাজাহান দেশীয় অস্ত্রধারী ৪০/৫০ লোক নিয়ে ওই জমিতে আদালতের দেওয়া সাইনবোর্ড সরিয়ে আম, মেহগনি, সেগুন গাছসহ অন্যান্য গাছ কেটে ফেলে। এ ঘটনার পর অপর পক্ষের শাহিন আলী ও স্থানীয়রা তাদেরকে প্রতিহিত করে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
এদিকে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার দামুড়হুদা উপজেলার প্রতিনিধি ও দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল হক পিপুল যান। এসময় ভুক্তভোগীর সঙ্গে ঘটনার বিবরণীর সংবাদ সংগ্রহ ও ভিডিও ধারণ করে বাড়ি ফেরার পর বিএনপি নেতা নাহারুল ইসলাম ওই সাংবাদিককে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেন। এ সময় তিনি সাংবাদিক পিপুলকে তুলে নিয়ে যাওয়ারও হুমকি দেন।
এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে দর্শনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক।
এদিকে, এ ঘটনায় পর দর্শনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে এক জরুরি সভার আয়োজন করে। সভায় উপস্থিত সকল সাংবাদিকবৃন্দের একত্রিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিএনপি নেতা নাহারুল ইসলামের নামে দর্শনা থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করা হয়েছে। সাধারণ ডায়েরি নাম্বার ১১৩৮।
জরুরী সভায় সভাপতিত্ব করেন দর্শনা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। সভায় বক্তব্য রাখেন দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল হক পিপুল সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান রনি সাধারন সম্পাদক ওসমান আলী, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হানিফ মন্ডল, সহসাধারণ সম্পাদক মনিরুজামান, সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান যুদ্ধ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হানিফ মন্ডল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান ধীরু, সাবেক সভাপতি আওয়াল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল মেহমুদ, আহসান হাবিব মামুন, মাসুম বিল্লাহ, ইমতিয়াজ আহমেদ রয়েল, ওয়াসিম রয়েল, আবিদ হাসান রিফাত,সাব্বির আলিম, আব্দুল হান্নান, রাজিব মল্লিক, শ্রী সুকমল চন্দ্র দাস বাঁধন, ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয় কমিটির সদস্য নাহারুল ইসলাম সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার দুটি মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত বলেন, নাহারুল ইসলাম পৌর বিএনপির নেতা। থানা বিএনপি আর পৌর বিএনপি সম্পূর্ণ আলাদা ইউনিট। সুতরাং এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। তবে বিষয়টি আমি লোকমুখে শুনেছি।
এ বিষয়ে দর্শনা থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) শহীদ তিতুমীর বলেন, সাংবাদিককে হুমকির বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এটি আদালতে পাঠানো হবে। আদালতের অনুমতি পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।