অপরাজেয় বাংলা ডেক্স:
করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশের প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক কামাল লোহানী মারা গেছেন। শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুস ও কিডনির জটিলতা ছাড়াও হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন প্রবীণ এ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার। আরো জানাচ্ছেন ইমরান হোসাইন।
কামাল লোহানী, পুরো নাম আবু নাইম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান লোহানী। জন্ম ১৯৩৪ সালে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার খান মনতলা গ্রামে। পাবনা জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন ১৯৫২ সালে। পরে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি ঘটে তার।
পাবনা জেলা স্কুলে শেষ বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় ৫২ ভাষা আন্দোলনে অংশ নেয়ার মধ্য দিয়ে তার রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ১৯৫৫ সালে গ্রেপ্তার হলে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে একই জেলকক্ষে বন্দিজীবন কাটান। সেই বন্দি দিনগুলোতে তিনি বঙ্গবন্ধুর সন্নিকটে আসেন। ষাটের দশকের শেষভাগে ন্যাপের রাজনীতিতে জড়িয়ে কামাল লোহানী যোগ দেন আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠকও তিনি। ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সংবাদ বিভাগের প্রধান। ৭৫ এর বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন কামাল লোহানী। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দুই বার মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ছায়ানটের সম্পাদক ছিলেন পাঁচ বছর।
কামাল লোহানীর সাংবাদিকতার শুরু হয়েছিল দৈনিক মিল্লাত দিয়ে। এরপর আজাদ, সংবাদ, পূর্বদেশ, দৈনিক বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। সাংবাদিক ইউনিয়নে দুই দফা যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৪ বছর আগে মারা যাওয়া স্ত্রী দীপ্তি লোহানীর কবরে শেষনিদ্রায় শায়িত হলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক কামাল লোহানী। আজ শনিবার রাত ১০টায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সোনতলা গ্রামের কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ কামরুল ইসলাম
মোবাইল নং : ০১৭১০৭৮৫০৪০
Copyright © 2025 অপরাজেয় বাংলা. All rights reserved.