Type to search

কেশবপুরে নদীতে বাঁধ দেয়ায় অর্ধশতাধিক বিলে বোরো আবাদ অনিশ্চিত

যশোর

কেশবপুরে নদীতে বাঁধ দেয়ায় অর্ধশতাধিক বিলে বোরো আবাদ অনিশ্চিত

জাহিদ আবেদীন বাবু,কেশবপুর,,(যশোর) থেকে।
যশোরের কেশবপুরে নদীতে বাধ দেয়ায় ৮ ইউনিয়নের অর্ধ শতাধিক বিলে জলাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে। ফলে বীজতলা তৈরীর উপযুক্ত সময় হলেও এখনও বিল সংলগ্ন এলাকার কৃষকরা বোরো বীজ তলা তৈরী করতে পারেনি। ফলে বোরো আবাদ নিয়ে কৃষকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় পানি নিষ্কাশনের দাবিতে কৃষকরা সভা, সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।

যে কারণে গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় পানি সরানোর দাবিতে কন্দর্পপুর ঈদগাহ মাঠে ১০ গ্রামের শত শত কৃষকের উপস্থিতিতে ঘের মালিকদের নিয়ে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলাউদ্দীন, পানি নিষ্কাশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নওশের আলী, ঘের মালিক আবু সাইদ লাভলু, সাবেক মেম্বার মুনছুর আলী, জয়দেব দাস, প্রভাষক তুহিন আলম, জমির মালিক হারুনর রশিদ প্রমুখ।

সমাবেশ থেকে জরুরীভাবে পানি সরানোর দাবি জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক ও ইউএনও বরাবর স্মারক লিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগে হাবাসপোল ঈদগাহ মাঠে মধ্যকুল, হাবাসপোল, হাসাডাঙ্গা গ্রাম সংলগ্ন বলধালী বিলের পানি সরানোর দাবিতে কৃষকরা সমাবেশ করেছে।

কেশবপুর উপজেলার উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিম এলাকার ৮ ইউনিয়নে কমপক্ষে ছোট বড় ৯০টি বিল রয়েছে। এরমধ্যে বিল গরালিয়া, টেপুর বিল, বলধালী, বাকাবরশি বিল, হাবাসপোল বিল, খতিয়াখালি বিল উল্লেখযোগ্য। এসব বিলের পানি হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদী দিয়ে আপারভদ্রায় নিষ্কাশন হয়ে থাকে। এ ৩টি নদী পলীতে ভরাট হওয়ার কারণে গত ২০১৬ ও ১৭ সালে পর পর ২ বার ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দীসহ কোটি কোটি টাকার ফসলহানি ঘটে। এ সমস্যা নিরসনে চলতি বছর ওই ৩ নদীসহ সংযোগ খাল খননে সাড়ে ৪৯ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করছে। এ সময় খননের নামে নদীতে বাধ দেয়ায় পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে বিলগুলিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। কন্দর্পপুর গ্রামের কৃষক আল হেলাল জানান, নদীর তলদেশ থেকে বিলের তলদেশ আরও নিচু। যে কারণে প্রায় ১ যুগ ধরে পৌরসভা, সদর, বিদ্যানন্দকাটি, মঙ্গলকোট ও পাঁজিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ বিল এলাকার কৃষকদের স্যালো মেশিন দিয়ে ২০/২৫ দিন ধরে পানি নিষ্কাশন করে বিলে বোরো আবাদ করতে হয়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ বোরো বীজতলা তৈরীর উপযুক্ত সময়। অথচ এখনও বিলে অগভীর পানি রয়েছে। এ অবস্থায় চলতি বছর বোরো আবাদ হবে কিনা তা নিয়ে কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

বিল গরালিয়া পানি নিষ্কাশন কমিটির সভাপতি মজিবার রহমান চান বলেন, হরিহর, বুড়িভদ্রা ও আপারভগাামবআদ্রা নদীতে ৫টি বাধ দেয়ার কারণে বিলের পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না । উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাদেব চন্দ্র সানা সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছর ১৬ হাজার ২’শ হেক্টর জমি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন বীজতলা তৈরীর উপযুক্ত সময়। গত মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় বোরো আবাদের লক্ষ্যে বিলের পানি সরানোর দাবি জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মুন্সি আছাদুল্লাহ বলেন, কৃষকদের ধান লাগানো যেমন জরুরী, তেমনি নদী খননও জরুরী হয়ে পড়েছে। নদীতে কোন বাধ নেই। আপারভদ্রা উচু হওয়ার কারণে পানি সরছে না। দ্রুত আপারভদ্রা ড্রেজিং চলছে। ইতিমধ্যে ২৭ নভেম্বর খোজাখালির গেট খুলে দেয়া হয়েছে। তবে মৌসুমের শেষ সময়ে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *