ইসলাম আল্লাহ’র বিধানাবলীর নাম। সুতরাং ইসলামের কোনো বিধানকে অবজ্ঞা করা বা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পালন না করার মানে হলো ঐ বিধানের সাথে কুফরি বা ফাসেকি করা। কুফর অর্থ অস্বীকার করা আর ফাসেক হলো পাপাচার। সুতরাং যে ব্যক্তি ইসলামের কোনো একটি বিধানকে অবজ্ঞা বা অস্বাীকার করলো, সে কুফরি করলো আর যে তা পালন করলো না, সে ফাসেকি করলো তথা- উক্ত কর্ম (আমল) সম্পাদন না করে গোনাহ কামাই করলো। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ স. এর জীবনের তথা ইসলামি শরীয়তের অন্যতম একটি বিধান হলো- ‘দাঁড়ি রাখা’। কিন্তু আমাদের সমাজে বহু মুসলিম ইচ্ছাকৃত দাঁড়ি রাখেন না, আবার কেউ কেউ অবজ্ঞাও করেন। কেউ আবার সামর্থ্য থাকার পরও দাঁড়ি রাখেন না। শুধু তাই নয়, এমন অনেক মসজিদ মাদরাসা আছে, যার পরিচালনা কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ দায়িত্বশীলদের মুখে দাঁড়ি নেই। ভাবা যায়! দাঁড়ি রাখা যেখানে শরীয়তের ওয়াজিব ইবাদত, সেখানে দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের মুখে দাঁড়ি নেই।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, যিনি নিয়মিত দাড়ি কাটেন বা ছাঁটেন, গবেষণা বলছে- তিনি সারা জীবনে গড়ে ৩ হাজার ৩৫০ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন দাড়ি কাটার পেছনে। দিনের হিসাবে প্রায় ১৩৯ দিন। ইসলামী সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন দাড়ি। পুরুষের বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। দাড়ি রাখার মাধ্যমে পুুরুষের মুখের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। দাড়ি শুধু পুরুষের বীরত্বের পরিচয়ই বহন করে না বরং ইহা আল্লাহর ভয়ের অন্যতম নিদর্শনও বটে। দাড়ি রাখা প্রিয় নবি সা.এর একটি বিশেষ সুন্নাত।
দাড়ি না রাখার ক্ষতি দাড়ি না রাখার অসংখ্য ক্ষতি রয়েছে :
এক. দাড়ি মুড়ানো বা ছোট করা মুশরিক, অগ্নিপূজক ও বিধর্মীদের অভ্যাস। আর মুসলমানদের জন্য বিধর্মীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা হারাম। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কোনো জাতির সাদৃশ্য (বেশভূষা, আকার-আকৃতি) অবলম্বন করে, সে ওই জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ (জামে ছগির, ২/৮)।
দুই. দাড়িবিহীন চেহারা নারীজাতির চেহারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখে। এ ধরনের সামঞ্জস্য অবলম্বন করা হারাম।
তিন. এর ফলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অবাধ্যতা প্রদর্শন হয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।’ (সুরা জিন, ২৩)
চার. দাড়ি না রাখার মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন ও বিকৃতি ঘটানো হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই।’ (সুরা রুম, ৩০)।
পাঁচ. দাড়ি না রাখলে অবিশ্বাসীদের অনুসরণ করা হয়। অথচ আল্লাহ তাআলা অবিশ্বাসীদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দ্বীনের বিশেষ বিধানের ওপর। সুতরাং তুমি এর অনুসরণ করো; অজ্ঞদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না।’ (সুরা জাসিয়া, ১৮)।
দাড়ি রাখার উপকারিতা :
কুরআন-সুন্নাহ ও আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, দাড়ি রাখার মাধ্যমে শরীর সুরক্ষা এবং আল্লাহ ও তার প্রিয় রাসুলের স. সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। এ দাড়িই কেয়ামতের দিন অন্ধকারের সময় নুরে ঝলকাতে থাকবে। ঈমান ও আমল ঠিক থাকলে দাড়ি রাখা ব্যক্তিদের হাসর হবে নবি-রাসুলগণের সাথে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দাড়ি রাখার মাধ্যমে প্রিয় নবি সা.-এর নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
প্রকাশক ও সম্পাদক :
মোঃ কামরুল ইসলাম
মোবাইল নং : ০১৭১০৭৮৫০৪০
Copyright © 2025 অপরাজেয় বাংলা. All rights reserved.