Type to search

আপন পর

সাহিত্য

আপন পর

বিলাল মাহিনী

মেয়ে দু মাসের পোয়াতি, এতেই মায়ের ঘুম হারাম হয়ে গেছে ;
গর্ভবতী মেয়ের যাতে এক পেয়ালা জল ঢেলে পান করতে না হয়;
তাইজন্যে মা সারাক্ষণ মেয়ের সেবায় ব্যস্ত সময় পার করে
নিজের শরীরে শত রোগ পুষে, অসুস্থ শরীরে তিনবেলা রান্না, থালাবাসন, কাপড়চোপড় ধোয়া থেকে শুরু করে মেয়ের সংসারের সব কাজ একাই সামলে নেয় মা

মেয়ে যখন সাত মাসে পড়লো, মা তখন বাবাকে পাঠিয়ে পোয়াতি মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে এলো,
এরপর সন্তান প্রসবের আগ অবধি এহেন খাবার নেই যা মেয়েকে খাওয়ায়নি মা

মেয়ের কষ্ট হবে ভেবে তার কাপড়চোপড় ধুয়ে দেয়াসহ সব কাজ মা একাই সামলাতে লাগলো,
মেয়ের শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত চেকআপ, দুধ ডিম কচি মুরগি ও কবুতরের গোস্ত খেতে দিত মা-বাবা,

সবুজ শাকসবজি, বেদানা, আপেল কলা… কত্তো ফলফলাদি যে মেয়েকে খাওয়ালো তার ইয়ত্তা নেই
মেয়ের সিজারের জন্য ন’হাজার টাকাও জুটে রাখলো…

এর কিছুদিন পর মায়ের বৌমা পোয়াতি হলো
আট মাস চলে, তবু তিনবেলা বৌমাকেই রাঁধতে হয়
কাপড়চোপড় ধোয়া, ছোট মেয়েটাকে খাওয়ানো, গোসল করানো, ঘুম পাড়ানো, গরু-ছাগল, হাস-মুরগি দেখাশোনা সাংসারিক আরও কত্তো
ঝুটঝামেলা!
সবটা বৌমাকেই করতে হয় এই অসুস্থ শরীর নিয়ে
মেয়েকে এত্তো কিছু খাওয়ানো মা বৌমাকে কোনোদিন এট্টা ফল এনে দিতে পারলো না, কচি মুরগি-কবুতর তো দূর ঝুট হে!

মেয়ের জন্য যতোটা পেরেশানি ছিলো মায়ের, তার সিকিভাগও যদি বৌমার জন্য থাকতো, তবে বৌমার কাছে শ্বাশুড়িও নিজ মায়ের মতোই শ্রদ্ধা পেতো হয়তো,
আহারে বাঙালি সমাজ সংসার!

পর কখনো আপন হয় না
আপন হয় না পর,
মরে মরুক পরের মেয়ে
ভালো থাকুক ঘর।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *