Type to search

অভয়নগরে ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে চালবাঁজি

অন্যান্য

অভয়নগরে ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে চালবাঁজি

স্টাফ রিপোর্টার:অভয়নগরে ১০ টাকা কেজি দরে চাল, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে নানা অনিয়ম দেখা গেছে। অস্বচ্ছল লোকদের স্বচ্ছল দেখানো হয়েছে। অনেক দিন মজুর, হত দরিদ্রদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে স্বচ্ছল লোকদের তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে।
উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ভাটপাড়া ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আনিচুর রহমান দিনমজুর তাকে স্বচ্ছল দেখিয়ে তার চাল বিতরণের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। ওই কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রসাদ কৃষ্ণ নামে একজন মুদি দোকানীকে। হারুণ হোসেন একজন ক্ষেতমজুর তাকে স্বচ্ছল দেখিয়ে স্থানীয় পাট ব্যবসায়ী পরিমাল রায়কে কার্ড দেওয়া হয়েছে। একই পরিবারে এক জনের বেশি লোককে তালিকাভূক্ত করার নিয়ম নেই। কিন্তু ভাটপাড়ার কুটিরাম বিশ^াসের পরিবারে তার ছেলে নিতাই বিশ^াস, স্ত্রী রিতা রানী, মেয়ে পার্বতী বিশ^াস, ও আরো এক ছেলে তপন বিশ^াস মিলে চারটি কার্ড পেয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তরের এক প্ররিপত্রে জানা গেছে এ বছর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির জন্য ভোয়া নামধারী, স্বচ্ছল,মৃত ব্যক্তি ও স্থান ত্যাগকারীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য বলা হয়। এ জন্য ইউনিয়ন উপজেলা ও জেলা কমিটি গঠন করে বাছাই করার কথা বলা হয়। ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটিতে থাকবেন ইউপি চেয়ারম্যান সভাপতি, সকল মেম্বর সদস্য, ইউএনও কর্তৃক মনোনিত এলাকার দুইজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ইউপি সচিব সদস্য সচিব। এরাই তালিকা করে উপজেলা কমিটির কাছে পাঠাবে । উপজেলা কমিটি যাচাই করে তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করবেন। কিন্তু বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তারা এলাকার কোন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত না করে মেম্বাবারা ভুয়া গণ্যমান্য ব্যক্তি দেখিয়ে নিয়ম বহিভুত তালিকা করেছেন। এ ব্যপারে জানাতে চাইলে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বর ওসমান গণি বলেন, কুটি মিয়ার ১৫টি ছেলে মেয়ে এ জন্য তার পরিবারের চারজনকে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির কার্ড দেওয়া হয়েছে। আর অন্য অস্বচ্ছল লোকদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কেন ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তারা সবাই স্বচ্ছল লোক। তাদের বাদ দিয়ে অস্বচ্ছল লোকদের তালিকা ভূক্ত করা হয়েছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মিনা খানম জানান, বাঘুটিয়া ইউনিনের অনিয়ম আগেই ধরা পড়েছিলো। আমি ওসমান গণি মেম্বরকে তালিকা সংশোধন করতে বলেছিলাম কিন্তু তিনি তা করেন নি। আমি উপজেলা কমিটির মিটিংয়ে এ ব্যপারে প্রস্তাব আনবো। প্রকৃত হত দরিদ্ররা যাতে কার্ড পায় তার ব্যবস্থা করা হবে।
“খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি” সংক্রান্ত মাননীয় খাদ্যমন্ত্রী, গত ১ এপ্রিল জেলা প্রসাশক, জেলা ও উপজেলার সকল খাদ্য নিয়ন্ত্রকের উদ্যেশে এক চিঠি অনলাইনে প্রেরণ করেন। তাতে বলা হয়।
আপনারা জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সাল থেকে দরিদ্রের মধ্যে “শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ ” এই শ্লোগান কে সামনে রেখে “খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি” চালু করেছেন। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে পঞ্চাশ লক্ষ পরিবারকে পরিবারপ্রতি মাসিক ত্রিশ কেজি করে চাল মাত্র ১০ টাকা কেজি দরে দিয়ে যাচ্ছেন।

“খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি’র ” চাল ডিলার মারফত কার্ডের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

বর্তমান খাদ্য সচিব প্রায় তিন মাস পূর্বে সকল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট সবার নিকট তালিকাগুলি হালনাগাদ করার জন্য পত্র দিয়েছেন। তারপরেও তালিকাসমূহ যদি সম্পুর্ণ হালনাগাদ না হয়ে থাকে তবে এক্ষণে আপনাদের কাছে আমার পুনঃনির্দেশনা যদি কোন ডিলার, কোন মেম্বার বা কেউ যদি বেনামী কার্ড সংরক্ষণ করে থাকেন তবে আগামী ০৫/০৪/২০২০ (রবিবার) তারিখের মধ্যে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তা জমা দিবেন এবং স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা খাদ্য বান্ধব কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নীতিমালা অনুসরণ করে রিসমেন্ট করবেন।

এই নির্দেশনার পরেও যদি কোন অবৈধ কার্ড ধরা পড়ে তবে সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। বিষয়টি আপনারা সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের অবহিত করবেন।