এই সুযোগে হাসপাতালের আশেপাশে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে অসাধু দালাল চক্র। দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন চিকিৎসা প্রত্যাশিরা।
চলতি বছরের ১২ই অক্টোবর গোপালগঞ্জ থেকে ছেলে ধীমান ঘোষকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করাতে নেন বাবা সমর চন্দ্র ঘোষ।
সপ্তাহে একদিন ভর্তির বিষয়টি জানা না থাকায় অপরিচিত শহরে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন বাবা। এসময় সমর চন্দ্রকে টার্গেট করে দালাল চক্র। দালালের খপ্পরে পড়ে মানসিক হাসপাতালের পাশে সুরমা মেন্টাল ক্লিনিকে ভর্তির মাত্র ১৫ দিনের মাথায় মৃত্যু হয় ছেলে ধীমানের।
সমর চন্দ্র বলেন, “আমি দেখার উদ্দেশ্যে পাবনা রওনা হওয়ার পর বলা হয় আমার ছেলে মারা গেছে। পরে তার গায়ে-পায়ে দেখা যায় আঘাতের চিহ্ন।”
সুরমা মেন্টাল ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মাহমুদুল হাসান হিরোক বলেন, “একটা বাবা ছেলেকে রেখে গেছেন চিকিৎসার জন্য। সেই ছেলেকে আমি কিভাবে টর্চার করে মেরে ফেলবো! প্রশ্নই আসে না।”
কেবলমাত্র সমর ঘোষ নয়, দুরদুরান্ত হতে আসা এমন রোগীর স্বজনদের অসহায়ত্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র।
শুধু দালালদের দৌরাত্মই নয়, লোকবল সংকটও রয়েছে পাবনা মানসিক হাসপাতালে। ৩১ জন চিকিৎসকের বিপরীতে মাত্র ১৭ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ৫০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতালটি। রয়েছে ওয়ার্ডবয়, ক্লিনার সংকটও। আগে সপ্তাহে ৬দিন রোগী ভর্তি করা হলেও এখন করোনার কারণে রোগী ভর্তি নেয়া হয় সপ্তাহে মাত্র ১ দিন।
প্রতারণা ঠেকাতে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে বলে মনে করেন পাবনা মানসিক হাসপাতালেরভ আবাসিক সাইকিয়াট্রিষ্ট মাসুদ রানা সরকার।
দালাল চক্রের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ। তিনি বলেন, “দালালদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছিল। তবে বিধি বহির্ভূতভাবে যেসব হাসপাতাল চলছিল সেগুলো, বিশেষ করে মানসিক চিকিৎসার হাসপাতালগুলো চলতে পারবে না।”
সূত্র, DBC বাংলা