Type to search

অভয়নগরে বাল্য বিবাহের জন্য মহাকাল বি.সি.সি মোজাদ্দেদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শুন্অভয়নগরে বাল্য বিবাহের জন্য মহাকাল বি.সি.সি মোজাদ্দেদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শুন্য সম্প্রতি ১৭ জন শিক্ষার্থী বাল্য বিবাহের শিকার

যশোর

অভয়নগরে বাল্য বিবাহের জন্য মহাকাল বি.সি.সি মোজাদ্দেদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শুন্অভয়নগরে বাল্য বিবাহের জন্য মহাকাল বি.সি.সি মোজাদ্দেদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শুন্য সম্প্রতি ১৭ জন শিক্ষার্থী বাল্য বিবাহের শিকার

অভয়নগরে বাল্য বিবাহের জন্য মহাকাল বি.সি.সি মোজাদ্দেদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শুন্য : মাদ্রাসার সুপার কাজী সেজে বাল্য বিবাহ দিয়ে অর্থ হাতানোর অভিযোগ : সম্প্রতি ১৭ জন শিক্ষার্থী বাল্য বিবাহের শিকার

অভয়নগর(যশোর) প্রতিনিধি
অভয়নগরে বাল্য বিবাহের জন্য মহাকাল বি.সি.সি মোজাদ্দেদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শুন্য কোটায় নেমে এসেছে। ওই প্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি ১৭ জন শিক্ষার্থী বাল্য বিবাহের শিকার হয়েছেন। অত্র প্রতিষ্ঠানের মাদ্রাসার সুপার আ ন ম আব্দুল হক শিকদার কাজী সেজে মাদ্রাসা পড়–য়াদের বাল্য বিবাহ দিয়ে অর্থ হাতানোর অভিযোগ ওঠেছে। জানা গেছে, মহাকাল বি.সি.সি মোজাদ্দেদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের জন্য রেজিং করে ২০ জন । এর মধ্যে থেকে ১১ জন শিক্ষার্থীর বাল্য বিবাহের শিকার হয়। এছাড়াও ২০২৪ সালে দাখিল পরীক্ষার জন্য অংগ্রহণ করবে ২২ জন। তার মধ্যে থেকেও কিছু দিন আগে ১০টি শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে গেছে বলে জানা যায়। যে কারণে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওই প্রতিষ্ঠানের দিন দিন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এখন ১১ জন। মাদ্রাসার সুপার আ ন ম আব্দুল হক শিকদার তিনি চেঙ্গুটিয়া ১ নং ওয়ার্ডের কাজী। তিনি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সচেতন না করে বহু বাল্য বিবাহের হোতা। সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের মার্চ মাসে যশোর জেলার বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে যশোর অভয়নগর উপজেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করে ঢাকঢোল পেটানো হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে লাল কার্ড পৌঁছে দেওয়া হয়। বাল্যবিবাহ বন্ধে তৎপরতা থাকলেও পরবর্তীতে তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ফলে বাল্য বিবাহ প্রবণ উপজেলায় একের পর এক এ ঘটনা ঘটতে থাকে। এদিকে, করোনা মহামারীর কারণে প্রায় ১৮ মাস যাবত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা তাদের অনেক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন অজুহাত এলাকায় বখাটেদের উৎপাত, উত্ত্যক্ত করা, অপরহরণচেষ্টা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যাসিড নিক্ষেপের আতঙ্কে তারা তাদের মেয়েকে বয়স প‚র্ণ না হতেই বিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলার মহাকাল বি.সি.সি মোজাদ্দেদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার ২২ জন ছাত্রী মধ্যে ১১ সাম্প্রতিক বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। তাদের কেউ ছিল এসএসসি পরীক্ষার্থী, অন্যরা নবম ও দশম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসের ছাত্রী। কেবলমাত্র অভিভাবকরাই সবাইকে গোপন করে এ বিয়ে দিয়েছেন। এর সঙ্গে জড়িত হয়ে গেছেন মাদ্রসার সুপার একশ্রেণির বিবাহ রেজিস্ট্রার ও নোটারি পাবলিক। যারা জাল কাগজপত্র তৈরি করে বিয়ে সম্পন্ন করেছেন। ওই বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে দাখিল পর্যন্ত ছাত্রী সংখ্যা ১০০ জন। বাল্যবিবাহের শিকার শিক্ষার্থীদের বয়স সর্বোচ্চ ১৬ বছর। বাল্যবিয়ের শিকার শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া গেছে। এরা হলো- বালিয়া ডাঙ্গা ও চেঙ্গুটিয়া, মহাকাল এলাকার স্কুলছাত্রী সুমাইয়া খাতুন, খায়রুন নেছা, সামিহা তন্নি, আসমা খাতুন,সুমাইয়া আক্তার, বিথী, তহ মিনা, সুখ জাহান, বর্ষা, মুনিরা, সোনিয়া মিম, ইরানী, আয়শা, মোছাঃ বৈশাখী খাতুন, নাসিমা খাতুন, মিমি খাতুন, মোছাঃ তাসলিমা খাতুন, মোহনা আক্তার, আখিঁ আক্তার র্উমিলা, মোছাঃ চৈতি খাতুন, আজমিরা খাতুন, আয়েশা খাতুন ও খাদিজা খাতুনসহ নাম না জানা আরো অনেকেই। তারা সবাই এখন শ্বশুরবাড়িতে। বিদ্যালয়ে তারা আর ফিরবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। উল্লেখ্য, ১৯২৯ সালে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাস করা হয়। এ আইন ১৯৩০ সালের ১ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হয়। এই আইন ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন এবং ১৯৮৪ সালের অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়।আইন অনুযায়ী বাল্যবিবাহ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই আইনে পুরুষের বিয়ের বয়স নূন্যতম ২১ এবং নারীর নূন্যতম ১৮ বছর নির্ধারিত হয়। এই বয়সের নিচে কেউ বাল্যবিবাহ করলে এক মাস বিনাশ্রম কারাদÐ অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দÐে দÐিত হবে। বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনাকারী, বাল্যবিবাহের শিকার সংশ্লিষ্টদের মা-বাবা বা অভিভাবকদের জন্যও একই শাস্তির বিধান আছে। নবম ও দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের সমাজের বাল্য বিয়ে কাম্য নয়। আমরা মেয়েরা আমাদের সচেতন হতে হবে। ভাল ভাবে পড়ালেখা করলে বাসা থেকে তো বিয়ের কথা বলবে না। অভিভাবকদের সচেত হাওয়া উচিত। আমাদের প্রষ্ঠিানের ১০/১২ জন সম্প্রতি বিবাহ হয়েছে। আমরা লেখা পড়া করছি বাসা থেকে যদি বিবাহের জন্য চাপ দেয়। তাহলে আমরা বিয়ে করবো না। পড়া লেখার দিখে মনোযোগী হবো। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করবো। অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকমন্ডলীরা বলেন, প্রথম দিকে অনেক মেয়ে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। কিছু দিন পরে তা শুণ্য কোটায় নেমে আসে। বয়স প্রাপ্ত না হওয়ার আগেই বার‌্য বিবাহের শিকার হচ্ছে।বিবাহ হওয়ার কারণে ছাত্রী শুন্য দেখা দিয়েছে।যে কারণে প্রষ্ঠিানের ঠিকে থাকা দায় হয়ে পড়ে। তখন এর প্রভাবটা পড়ে শিক্ষকদের উপর। দেখা যায় বেতন বন্ধ সহ নানা অসুবিধা। তারা আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের অপ্রাপ্ত বয়সে বিবাহ দিবেন না। অভিভাববক সদস্য আব্দুল কুদ্দুস গাজী বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক ভাবে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে পড়াশুনা করে। যখন অষ্টম শ্রেনী পার হয়। তখন তাদের বিয়ে হয়ে যায়। ক্লাস ১০ শ্রেণীতে উঠার পর পর ঢালাও ভাবে বিবাহ হয়ে যায়। যাকে বলে বাল্য বিবাহ। এই বাল্য বিয়ে যারা পড়ায় । আমি তাদের প্রতি তিব্র প্রতিবাদ জানায়। সহকারী সুপার আবু তাহের বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের ২০২৪ সালের দাখিল পরীক্ষার্থী রেজিং করা হয়েছে ২২ জন। ২০২৫ সালে পরীক্ষা দিবে । যারা নবম শ্রেণীতে আছেন ২৫ জনের মত। এদের মধ্যে থেকে ৫০% বাল্য বিবাহের শিকার হচ্ছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে কেউ একজন বাল্য বিবাহ দিয়ে যাচ্ছেন। এবং বাইরে থেকে কেউ না কেউ বিবাহ পড়াচ্ছেন। আমাদের অত্র প্রতিষ্টানের সুপার সাহেব কাজী। সভাপতি মোঃ আলী হোসেন বলেন, দাখিল বালিকা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালে দাখিল পরীক্ষায় রেজিং করে ২০ জন । এর মধ্যে থেকে ১১ জন শিক্ষার্থীর বাল্য বিবাহ হয়ে যায়। এছাড়াও ২০২৪ সালে দাখিল পরীক্ষার জন্য অংগ্রহণ করবে ২২ জন। তার মধ্যে থেকেও কিছু দিন আগে ১০টি শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে গেছে। আর পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ১১ জন। মাদ্রাসার সুপার আ ন ম আব্দুল হক শিকদার তিনি চেঙ্গুটিয়া ১ নং ওয়ার্ডের কাজী। তিনি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সচেতন না করে বাল্য বহু বাল্য বিবাহের হোতা। মাদ্রাসার সুপার তার ছেলেকে দিয়ে এ কাজ গুলো করে থাকেন। সুপার মাদ্রাসাকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাসার সুপার আ ন ম আব্দুল হক শিকদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে শিক্ষক ও অভিভাবকদের যে অভিযোগ তা সম্পূর্ন মিথ্যা। আমি মুলত বিবাহের রেজিং করে থাকি। সরকার লাইসেন্স দিয়েছে রেজিং করার জন্য। আমি শুনেছি অভিভাবকেরা তাদের মেয়েদের বিবাহ দিয়েছে। আমি এ কাজে জড়িত নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।