Type to search

সেচের মাধ্যমে ভবদহের জলাবদ্ধতা সমাধানের চেষ্টা ব্যার্থ

জেলার সংবাদ যশোর

সেচের মাধ্যমে ভবদহের জলাবদ্ধতা সমাধানের চেষ্টা ব্যার্থ

বোরো মৌসুমে ৪শত হেক্টর জমিতে কমেছে ধানের চাষ

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
যশোর জেলার মনিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর, খুলনার ডুমুরিয়া, ফুলতলা উপজেলার মোট ৪৭টি বিল নিয়ে ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চল গঠিত। এ সকল উপজেলার লাখো মানুষের দুঃখের কারণ ভবদহ সুইট গেট। যা বর্তমানে অত্র অঞ্চলের কাছে মরণ ফাঁদ নামে পরিচিত।
সাম্প্রতিক এ গেট বন্দ করে সেচের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিন্তু দীর্ঘ একটি বছর পার হলেও বাস্তবে কোন ফল হয়নী,অপর দিকে নদী মরে খালে পরিণত হয়েছে।
প্রতি মাসে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা ব্যয় করা হলেও বাস্তবে কোন সুফল মেলেনী বলে অভিযোগ হাজার-হাজার ভূক্তভোগী কৃষক সহ এলাকাবাসীর।
এ দিকে বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় গেল বছরের তুলনায় এবছর বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ গত বছরের তুলনায় আরও কমে গেছে বলে দাবী সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসের।
 বাস্তবে ভবদহ জলাবদ্ধতায়  এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ গ্রামের লাখো মানুষ পানি বন্দী রয়েছে, যে কারণে এ ব্যয় বহুল সেচ প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
তবে বিষয়টি বিএডিসি কর্মকর্তারা একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নী বলে অভিযোগ জানা যায়। সাম্প্রতি বিএডিসি’র চেয়ারম্যান, কৃষি সচিব ও খুলনা সেচ বিভাগের প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তণ কর্মকর্তারা ভবদহ এলাকা পরিদর্শনে আসেন। এ সময় স্লুইচ গেটের তলদেশে লিকেজের বিষয়টি তাদের চোঁখে ধরা পড়ে।
এ ঘটনায় যশোর সার্কিট হাউজে কৃষি মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এক সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাযায়, ভবদহ তৎসংলগ্ন বীলে ফসল ফলাতে ও পানি বন্দী মানুষের দূর্ভোগ নিরষণে পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) ও বিএডিসি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগে চলতি বছরের শুরুতেই এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। সভায় বিএডিসির খুলনা বিভাগীয় প্রধান (সেচবিভাগ) আব্দুল্লাহ আল রশিদ জানান, ভবদহ অঞ্চলের বিলে ফসল ফলাতে ও মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে পাউবো’কে বিএডিসি ৩০ এইচপি (হর্সপাওয়ারের) ২০টি সেচ পাম্প সরবরাহ করেছে। যা রক্ষণাবেক্ষনে বিএডিসির ৮ জন শ্রমিক ও একজন উপ-প্রকৌশলী সেখানে সার্বক্ষনিক দেখভাল করে থাকেন, স্লুইচ গেটের তলদেশে লিকেজের বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তা পাউবো’কে অবহিত করা হলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানা যায়।
 গত ১১ সেপ্টেম্বর বিএডিসি’র চেয়ারম্যান ডক্টর অমিতাভ সরকার, কৃষি সচিব মোঃ মেজবাহুল ইসলাম সরোজমিনে পরিদর্শনে আসলে লিকেজের বিষয়টি তাদের দৃষ্টি গোচর হয়।
১২ সেপ্টেম্বর যশোর সার্কিট হাউজে কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের উপস্থিতিতে এক সভায় পাউবোর’ নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিকেজের বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
যপবিস-২-এর ডিজিএম (কারিগরি) আবু হেনা শফি কামাল জানান, পাউবো’র আবেদনের প্রেক্ষিতে সেচ পাম্প কার্যক্রম চালাতে গত ৪ জানুয়ারি ২০টি বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। পাম্প চালাতে ৭০০ কে ভি ট্রান্সফরমার সরবরাহ, কন্সট্রাকশন ব্যয় হয় ৭ লক্ষ্য ৬০ হাজার এবং ট্রান্সফরমারের জন্য ব্যয় হয় প্রায় ২৫ লাখ টাকা। পুরো ব্যয় সমিতির পক্ষ থেকে করা হয়েছে।
এছাড়া পাউবো প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকে প্রায় ১৪ লাখ টাকা। মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, গত বোরো মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ২৯ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। কিন্তু এবার ভবদহ সংলগ্ন ৫টি বিলে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ কমে গেছে।
ভবদহ পানি সংগ্রাম কমিটির নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুল হামিদ বলেন, সাম্প্রতি ভবদহ সংলগ্ন ২০ গ্রামের মানুষের সাথে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত একজনও বলেনি সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি নিস্কাশনে তারা উপকৃত হয়েছেন। পাশ্ববর্তী কুলটিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পরমানন্দ মন্ডল জানান, বাজেকুলটিয়া, হাটগাছা, ডহর মশিয়াহাটি,সুন্দলী, আন্দা, ডুমুরতলা এবং বেদভিটাসহ কমপক্ষে ২০ গ্রামের মানুষ ভবদহ জলাবদ্ধতায় এখনও পর্যন্ত পানি বন্দী রয়েছে। এ বিষয়ে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ জানানা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদিচ্ছা না থাকায় জলাবদ্ধতার সমাধান হচ্ছে না।তারা চাইলে টি আর এম প্রকল্প চালুর মাধ্যমে জলাবদ্ধতার সমাধান সম্ভাব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *