শিকলে বাঁধা ৩ ভাই-বোনের জীবন!
মা আয়েজান বিবি বলেন, ৯ সন্তানের মধ্যে বছর কয়েক আগে এক ছেলে মারা যায়। বাকি দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তারা এখন সংসার করছে। আর দুই ছেলে পাগল হওয়ার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছে। অনেক কষ্টে তাদের সবাইকে বড় করেছি। বিয়েও হয়েছিল সবার। এদের মধ্যে অনেকের বাচ্চাও আসে। পাগল হওয়ার পর সবাই এদের ছেড়ে চলে গেছে।
আয়েজান বিবি আরও বলেন, এখন স্বামী ও ৪ সন্তানসহ ৬ জনের পুরো সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। স্বামী থেকেই নেই তিনিও প্রায় অসুস্থ। এদের বাড়িতে রেখে কোথাও কাজে যেতে পারি না। এলাকাবাসীর দেওয়া খাবার আর সহযোগিতা দিয়ে খুব কষ্টে চলতে হয় আমাকে। অভাবের সংসার হলেও চেষ্টা করেছি তাদের চিকিৎসা করানোর জন্য। প্রথমে নওগাঁ এরপর পাবনা হাসপাতালসহ বিভিন্ন কবিরাজের কাছেও চিকিৎসা নিয়েছি। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এখন সুযোগ পেলেই তারা মানুষের সঙ্গে খাবার আচরণ করে। এজন্য সবাইকে বেঁধে রেখেছি। এদের মধ্যে ছোট ছেলে একটু সুস্থ, তাই মাঝেমধ্যে তাকে শিকলে বেঁধে রাখি না।
স্থানীয়রা জানান, পরিবারের সবাই এমন পাগল। শুধু মা তাদের দেখাশোনা করে। অভাবের কারণে ঠিকমতো খাবার দিতে পারে না তিনি, কাপড় তো দূরের কথা। এদের দেখাশোনা করাও অনেক ঝামেলার। তারা সহজে গোসল ও ভাত খেতে চায় না। খালি মারামারি করে। আবার কেউ যদি কাছে যাই তাদেরকেও মারধর করে। এজন্য কেউ কাছে যেতে চায় না। পাড়া-প্রতিবেশী সাহায্য করলে তাদের বাড়িতে চুলা জ্বলে। তিন বেলা ভাত খেতে পারে না তারা।
স্থানীয় আহসানগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আক্কাস আলী প্রামাণিক জানান, এরই মধ্যে পরিবারের এক বোনের প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদের কার্ড করতে ও অন্যান্য সরকারি সহযোগিতা দিতে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।