রাত পোহালেই অভয়নগর উপজেলা নির্বাচন; লড়াই হবে ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতার মধ্যে
শেখ আতিয়ার রহমান, নওয়াপাড়া
রাত পোহালেই অভয়নগর উপজেলা নির্বাচন। নির্বাচনে মরিয়া হয়ে লড়াইয়ে নেমেছেন ক্ষমতাসীন দলের দুই নেতা। আগামী ২৯ মে বুধবার দেখা মিলবে তার ফলাফল।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নওয়াপাড়া পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান সরদার অলিয়ার রহমান মোটর সাইকেল প্রতিক নিয়ে এবং রাজঘাট নওয়াপাড়া শিল্পাঞ্চল শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক,অভয়নগর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রবিন অধিকারী ব্যাচা আনারস প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। দুই প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। তারা জোরেশোরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তীব্র্র তাপদাহের মধ্যে অসহ্য গরম আর বিগত দুইদিন ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে শেষ মুহূর্তে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নগুলোতে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে ভোট চাইছেন প্রার্থীরা। আরামকে হারাম করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা। নির্বাচনকে ঘিরে অভয়নগরে বিরাজ করছে উৎসব। তবে নির্বাচনে বিরোধী কোনো দল অংশ গ্রহণ না করায় এবং প্রতিদ্বন্ধিতা দুই আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যে হওয়ায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বিধা বিভক্তি দেখা দিয়েছে। ভোটাররা বিষয়টি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন।
অভয়নগর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদের এ নির্বাচন হয়ে উঠেছে তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ ও জমজমাট। শেষ পর্যন্ত কোন নেতা চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা পরিষদের চেয়ার দখল করবেন তা বলা কঠিন। প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রæতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা। পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলা শহর, গ্রামের হাট-বাজার, অলিগলিসহ পথ-প্রান্তর। প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ও তাদের কর্মীসমর্থকরা গণ-সংযোগের পাশাপাশি উঠান বৈঠক ও পথসভায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান তারু বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন তিন প্রার্থী। এরা হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ডা. মিনারা পারভীন (ফুটবল), যশোর জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা লায়লা খাতুন (কলস) ও অভয়নগর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সাফিয়া খানম(হাঁস)।
জানতে চাইলে রবিন অধিকারী ব্যাচা বলেন, দির্ঘদিন আমি উপজেলার গণমানুষের সুখ-দুঃখের সাথে রয়েছি। আমার সাথে উপজেলা শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, পৌর ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী রয়েছে। জয়ের ব্যাপারে আমার কর্মীসমর্থকরা শতভাগ আশাবাদী। আমিও তাদের আশায় আশান্বিত। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সরদার অলিয়ার রহমান বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার যে উন্নয়ন সেই উন্নয়নের একজন কর্মী হিসাবে অভয়নগর উপজেলার গুণিজন, সুধীজন, ব্যবসায়ীসহ সকল পেশা ও ধরণের মানুষ আমার সাথে রয়েছে। অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের প্রায় সব নেতাকর্মী আমার সাথে রয়েছে। আমি নওয়াপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে সততার সঙ্গে কাজ করে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। অভয়নগরবাসী সেটা জানে। ফলে তারা আমাকে ভোট দিতে চায়। আমার বিশ^াস আমি নির্বাচনে জিতব।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নওয়াপাড়া পৌরসভাসহ ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে অভয়নগর উপজেলা গঠিত। নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ১৮ হাজার ৯০ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ০৮ হাজার ৩৩৫ জন পুরুষ ও ১ লাখ ০৯ হাজার ৭৫৩ জন নারী। এর মধ্যে ২ জন তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার রয়েছে। এছাড়া এবারের নির্বাচনে ৮১টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের জন্য স্থায়ী ৬৫৯টি ও অস্থায়ী ২৮টি ভোট কক্ষের ব্যবস্থা করা হবে।