যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু

আন্দোলন, সহিংসতা আর ক্ষমতার পট পরিবর্তনের অস্থির সময় পেরিয়ে সারাদেশে আবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল সোমবার থেকেই। মঙ্গলবার শুরু হয়েছে লোকাল, কমিউটার, মেইল ট্রেন চলাচল।
বৃহস্পতিবার থেকে সব ধরনের আন্তঃনগর ট্রেনও যাত্রী পরিবহন করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
ঢাকার কমলাপুর স্টেশনের মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকাল থেকে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী কয়েকটি ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে।
“বলাকা, দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার, নারায়ণগঞ্জ কমিউটার, মহুয়া এক্সপ্রেস, তুরাগ, কর্ণফুলী এবং তিতাস কমিউটার সকালে ছেড়ে গেছে। একইভাবে ঢাকার দিকেও নির্ধারিত ট্রেনগুলো ছেড়ে আসছে।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম কার্যদিবস রোববার রেলভবনে এক সভায় ট্রেন চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। আর আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হয় পরদিন বিকাল ৫টা থেকে।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনের মধ্যে গত ১৬ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী ও ময়মনসিংহ, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রেলপথ অবরোধ করা হয়। তাতে কয়েক ঘণ্টার জন্য ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
পরদিন ট্রেন চলাচল অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দিন সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সেদিন ঢাকার মহাখালীতে রেললাইনে আগুন ধরিয়ে অবরোধ করা হয়। রেলপথের টঙ্গী-ভৈরব অংশের নরসিংদীতে রেললাইন তুলে ফেলা হয়। ঢাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় রেলপথ অবরোধ করা হয়।
নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সেদিন দুপরের পর দেশের বিভিন্ন রুটের ট্রেনের সব যাত্রা বাতিল ঘোষণা করা হয়।
এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ২৫ জুলাই থেকে সীমিত পরিসরে ট্রেন চালুর পরিকল্পনার কথা জানায় বাংলাদেশ রেলওয়ে।
তবে সেদিনও কোনো ট্রেন চলাচল করেনি। সেদিন রেল ভবনে এক বৈঠকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় রেলপথ মন্ত্রণালয়।
১৩ দিন বন্ধ থাকার পর ১ অগাস্ট স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু দুদিন চলার পর ৩ অগাস্ট শনিবার ফের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অসহযোগের ডাক দেওয়ায়।
সেই আন্দোলনেই ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।