Type to search

যশোরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণে যুক্ত হলো আরো ২৬২ পরিবার

যশোর

যশোরে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ণে যুক্ত হলো আরো ২৬২ পরিবার

অনলাইন ডেক্স:
মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পটি পেয়েছিল ভিন্নমাত্রা। সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছিল মানবিক এক কর্মযজ্ঞ। সেই দুর্বার অভিযাত্রায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে দু’শতক জমির দলিলসহ  ১ লাখ ৫০ হাজার ২শ’৩৩টি ঘর পেয়েছিলেন সারাদেশের গৃহহীনরা। বৃহস্পতিবার তৃতীয় পর্যায়ে যশোর জেলার দুশ’ ৬২ সহ আরও ২৬ হাজার ২শ’২৯টি পরিবার পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী ঘরের সাথে যুক্ত করেছেন আরেক স্বপ্নযাত্রা। সারাদেশকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত করার স্বপ্নীল অভিযাত্রা শুরু হলো মাগুরা আর পঞ্চগড় জেলাকে দিয়ে। মাগুরা জেলার মাগুরা সদর, শালিখা, শ্রীপুর, মহম্মদপুর এবং পঞ্চগড় জেলার পঞ্চগড় সদর, দেবীগঞ্জ, বোদা, আটোয়ারী ও তেঁতুলিয়াসহ ৫২ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুলনা বিভাগে প্রথম ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলা হওয়ার গৌরব লাভ করল মাগুরা। মাগুরা জেলার সদর, শালিখা, শ্রীপুর, মহম্মদপুরসহ ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলাও প্রথম ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হওয়ার মাইলফলকে যুক্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তৃতীয় পর্যায়ে ২৬ হাজার ২শ’২৯টি ঘর হস্তান্তর ও পঞ্চগড় আর মাগুরাসহ ৫২ উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি যুক্ত হন লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরকলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাহানপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার জঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাথে। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডক্টর আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ওপর ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করেন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আশ্রয়ণ একটি মানুষের ঠিকানা। আশ্রয়ণ জীবন-জীবিকার, বেঁচে থাকা, স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়ন করার অন্যতম অনুষঙ্গ। যে বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, সেই বাংলাদেশের কোনো মানুষ যেন ঠিকানাবিহীন না থাকে, তাদের জীবনটা যেন অর্থহীন হয়ে না যায়, তাদের জীবনটা যেন সুন্দর হয়, সেই লক্ষ্য নিয়ে এই উদ্যোগ সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার হাতে গড়া বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষের জন্য অন্তত বসবাসের একটি জায়গা করে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই এই আশ্রয়ণ প্রকল্প। বিভিন্ন এলাকায় গৃহহীন ও ভূমিহীন আছে কি না সেটি খুঁজে দেখার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের একটি দায়িত্ব রয়েছে। দলমত-নির্বিশেষে যে গৃহ ও ভূমিহীন থাকবে, আমরা তাদের ঘর, ঠিকানা এবং জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেব।
যশোরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়াদের তালিকায় বাঘারপাড়ায় ২৫, অভয়নগরে ৫, মণিরামপুরে ৩৪, কেশবপুরে ১৩, ঝিকরগাছায় ৯২, চৌগাছায় ৩৮ এবং শার্শায় ৫৫ টি পরিবার রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এই দুশ’ ৬২ পরিবারের  সদস্যদের হাতে স্ব স্ব উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু’শতক জমির দলিল, নামজারির খতিয়ানসহ সুদৃশ্য রঙিন টিনের ছাউনিযুক্ত দু’কক্ষ বিশিষ্ট থাকার ঘর, রান্নাঘর, টয়লেট ও ইউটিলিটি স্পেসসহ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই উপহার তুলে দেয়া হয়। বাড়ির মালিক হয়ে আপ্লুত হয়ে পড়ের গৃহহীন পরিবারের লোকজন।