Type to search

মাছ শিকারই ভবদহবাসির এক মাত্র আয়ের উৎস

জাতীয়

মাছ শিকারই ভবদহবাসির এক মাত্র আয়ের উৎস

প্রিয়ব্রত ধর,নওয়াপাড়াঃ
টানা ৬০ ঘন্টার বৃষ্টিপাতে যশোরের অভয়নগরে ছোট-বড় শত শত মাছের ঘের ভেসে একাকার। ভেসে যাওয়া ঘেরগুলো থেকে কোটি কোটি টাকার মাছ বিভিন্ন বীলে ও সরকারি খালে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই সুযোগে শিকারে নেমেছেন এক শ্রেণির মাছ শিকারি। তবে সে মাছ নাম মাত্র মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান মাছ শিকারীরা।
 এতে ঘের মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মাছ শিকারিরা হচ্ছেন মোটামুটি লাভবান।
জানা গেছে, জলাবদ্ধতার শিকার উপজেলার চলিশিয়া, পায়রা ও সুন্দলী  ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রামের কোটা, চলিশিয়া, বাগদাহ, আন্ধা, বলারাবাদ, বেতভীটা, সরখোলা, ডুমুরতলা, সুন্দলী, ডহর মশিয়াহটী, বাড়েধা, দীঘলিয়া, ভাটাডাঙ্গী, বারান্দিসহ হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় জীবন যাপন করছে। তবে ভেসে যাওয়া ঘেরের মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছেন অনেকেই,জীবিকার কোন পথ না পেয়ে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় বেছে নিতে হচ্ছে মাছ শিকারের পথ।
২০ সেপ্টেম্বর) সকালে মাছ শিকারি মশিয়াহাটি গ্রামের অসিম মন্ডল জানান, ভোরের আলো ফুটতেই জলাবদ্ধ গ্রামের শত শত মাছ শিকারি  রাস্তার উপর এসে জড়ো হচ্ছেন। তাদের কারও হাতে বড়শি, আবার কারও হাতে থাকছে মাছের খাবার। অনেকে আবার সঙ্গে এনেছেন মাছ রাখার জাল।
পরে ভেসে যাওয়া মাছের ঘের সংলগ্ন নদী বা খালের কালভার্টের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে বড়শি ফেলে মাছ শিকার শুরু করা হয়। যা চলে রাত পর্যন্ত। দেখা জাচ্ছে খেপলা জাল ব্যবহার করেও অনেকেই মাছ শিকার করছে।
সুন্দলী ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের পঙ্কজ বিশ্বাস জানান, গত ২ দিনে বড়শি দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতীর ছোট-বড় প্রায় ২০ কেজি মাছ ধরেছেন। যার মধ্যে রুই, কাতল, মৃগেল, তেলাপিয়া, কালবাউশ, পাঙাশসহ দেশি প্রজাতির মাছও রয়েছে। অনেক শিকারি আবার ধরা মাছ বিক্রিও করছেন। যেখানে মাছ শিকার চলছে সেখানে ক্রেতাও চলে আসছেন।
 ইতোমধ্যে এক শ্রেণির মানুষ বড়শির পরিবর্তে জাল ফেলে মাছ শিকার শুরু করেছেন।
হাটগাছা গ্রামের কয়েকজন ঘের মালিক জানান, একটি বিল ধরে তাদের মাছের প্রকল্প ছিল। যেখানে প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ দেওয়া হয়েছিল। নতুন পুরাতন মিলিয়ে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছিল। গত তিন দিনের টানা বর্ষণে প্রকল্পসহ আশেপাশের সব ঘের ভেসে গেছে। চোখের সামনে প্রকল্পের মাছ শিকার করতে দেখলেও কিছুই করার নেই। বর্তমান সময়ে ঘের মালিকদের সর্বনাশ হলেও শিকারিদের যেন শুরু হয়েছে পৌষ মাস।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, অভয়নগর উপজেলার ৩ ইউনিয়নের ১২০ হেক্টর জমির ৩২০টি মাছের ঘের ভেসে গেছে। যার ক্ষতির পরিমান অনেক আর এই ভেসে যাওয়া মাছ শিকার করতে শিকারিদের যেন এক উৎসব শুরু হয়েছে।