পটুয়াখালীতে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ!
পটুয়াখালীর দশমিনায় এখন পতিত জমিতেও আনারসের চাষ হচ্ছে। চাষিরা আনারস চাষে চিত্র পাল্টে দিয়েছেন। এখন বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ হয়। বিভাগ। শুধু তাই নয়, ধান-পাট হটিয়ে কৃষকরা আনারসের বাণিজ্যিক চাষে সফল হয়েছেন।
দশমিনার রনগোপালদী ইউনিয়নের শাহ আলম জোমাদ্দার বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে বাগান করছি। এবছর প্রায় ৫০ শতাংশ পতিত জমিতে মিশ্রচাষ হিসেবে আনারস চাষ করেছি। খরচ অপেক্ষা লাভ ৩ গুন বেশি। ফলন হওয়া সেই গাছ থেকেই আবার চারা তৈরী করে রোপণ করা যায়।
চাষি সুলতান সরদার বলেন, আমার জমি হলো উঁচু ও শুস্ক। এ জমিতে ধান, পাট চাষ করা যায় না। তাই এই জমিতে আনারসের চাষ করছি। ১ বিঘা জমিতে প্রায় ৪ হাজার আনারসের চারা লাগানো যায়। আনারস চাষে খরচও কম আর দাম ভালো থাকে বলে লাভ হয় দ্বিগুন।
দশমিনা কৃষি বিভাগ বলছে, বাড়ির আশেপাশের উঁচু জমিতে ধান, পাট এফসল ফলানো যায় না। কারণ এদুই ফসলেই পানির প্রয়োজন বেশি। তাই সেখানে আনারস চাষ শুরু হয়েছে। কারণ জমি পড়ে থাকার চেয়ে আনারস চাষ করে দ্বিগুন লাভ হবে।
আগে এই চাষ বাণিজ্যিকভাবে হতো না। কোন কোন চাষি শখ করে চাষ করতেন। এবছর পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র এবং দশমিনা উপজেলা কৃষি অফিস যৌথভাবে উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে পতিত জমির তালিকা করা হয় ও প্রতি একরে ৪ জন চাষিকে তালিকাভূক্ত করা হয়। চলতি মৌসুমে চাষিদের আনারস চাষের প্রতি উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিনা মূল্যে চারা ও নানা পরামর্শ দিয়ে চাষিদের সহযোগীতা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাফর আহমেদ বলেন, অনেক পতিত জমি পড়ে থাকতো। আনারসের চাষ হতো তবে সেটা বাড়ির আশেপাশে খুবই অল্প। আর উঁচু ও রুক্ষ জমি হওয়ায় সেখানে অন্য কোনো চাষাবাদ হতো না। সেই পড়ে থাকা জমিতেই আনারস চাষ করার জন্য চাষিদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এখন বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ হচ্ছে। চাষিরে বিনামূল্যে চারা ও সময় সময়ে পরামর্শ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনইস্টিটিউটের উদ্যাগতত্ত্ব ও গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে প্রচুর জমি আছে। তবে ফলের উৎপাদন নেই বললেই চলে। কিন্তু তার একটা বড় অংশ শুস্ক মৌসুমে পতিত থাকছে। সেই উচুঁ পতিত জমিতে আনারস চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কারণ আনারসে সেচের প্রয়োজন হয় না। উৎপাদন খরচও কম। তাছাড়া নিয়মিত পরিচর্ষাও লাগে না। বাড়তি সারের প্রয়োজন পড়ে না।