নড়াইলে অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
অধ্যক্ষ হিসেবে নতুন কর্মস্থল কুমড়ি-তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিম মাদরাসায় যোগদান করলেও আগের কর্মস্থল বারাশিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র নিয়ে আসেননি তিনি। বিষয়টি বারাশিয়া দাখিল মাদরাসার তৎকালীন সভাপতি ও মাগুরা সদরের বগিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রওনক হোসেনও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এস এম আবুল বাশার আমাদের মাদরাসার সুপার থাকাকালীন অন্য মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছেন বলে শুনেছি। তবে এখান থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র নেয়া এবং মাদরাসার আর্থিক হিসাব বুঝিয়ে দেননি তিনি। শুনেছি ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ পদে বেতনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কাগজপত্র পাঠিয়েছেন।
এদিকে, কুমড়ি-তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিম মাদরাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কে এম হাসমত উল্লাহ বলেন, গত ২ আগস্ট অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি ঢাকার সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এস এম আবুল বাশার তিন লাখ টাকার বিনিময়ে আগেই প্রশ্ন পেয়ে যান। নিয়োগ পরীক্ষার দিন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশে প্রতিকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ পরীক্ষায় অনুষ্ঠিত হয়। অথচ দেশে বিভিন্ন পরীক্ষাসহ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও আমাদের এই নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াসহ দেশে প্রতিকূল অবস্থা বিরাজ থাকায় মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শওকত হুসাইন ডিজির প্রতিনিধিকে ওইদিন (২ আগস্ট) পরীক্ষা না নেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু কোনো অনুরোধ না শুনে ডিজির প্রতিনিধি প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন।
অপর পরীক্ষার্থী মো: ওলিউল্লাহ বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার দিন এস এম আবুল বাশার আমাদের নানা ধরণের ভয়-ভীতি ও হুমকি দিয়েছেন। পরীক্ষার নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। মো: মঈনুদ্দীন বলেন, এস এম আবুল বাশার মাগুরা জেলা সদরের বারাশিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে সঠিক ভাবে ছাড়পত্র নিয়ে আসেননি। অধ্যক্ষ পদে বেতনের জন্য ভুয়া কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিয়েছেন। তদন্ত করে আবুল বাশারের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এ ব্যাপারে ডিজির প্রতিনিধি ঢাকার সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহাম্মাদ আব্দুর রশীদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর থেকে তার বক্তব্যের জন্য বারবার মোবাইল ফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলেও তিনি সাড়া দেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজের মাধ্যমেও তার বক্তব্য পাওয়ার অনুরোধ করা হলেও কোনো উত্তর দেননি তিনি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ এস এম আবুল বাশার বলেন, কুমড়ি-তালবাড়িয়া হামিদিয়া আলিম মাদরাসায় নিয়োগ পরীক্ষা যথাযথ নিয়মে হয়েছে। টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারে বলেন, এটা ঠিক নয়। আমি যোগ্যতা অর্জন করে নিয়োগ পেয়েছি।