Type to search

নড়াইলের ৪শ ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে নেই কোনো শহীদ মিনার 

নড়াইল

নড়াইলের ৪শ ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে নেই কোনো শহীদ মিনার 

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলের ৪শ ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে নেই কোনো শহীদ মিনার। নড়াইলে অর্ধেকের বেশী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই॥ শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ৪৪টি মাদ্রাসার একটিতেও নেই। নড়াইলে অর্ধেকের বেশী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে স্থায়ী কোনো শহীদ মিনার স্থাপিত হয়নি। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান,
জেলায় মোট ৬৯৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
মধ্যে ২শ৫৪টিতে শহীদ মিনার থাকলেও ৪শ ৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই। এদিকে
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে জেলায় ৪৪টি মাদ্রাসার একটিতেও নেই শহীদ মিনার।
জেলা প্রাথমিক ও জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মাধ্যমিক ও
কলেজ পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০৩টি। এর মধ্যে ৭৪টি শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ৪৪টি কামিল, ফাজিল, আলিম ও দাখিল মাদ্রাসার
একটিতেও শহীদ মিনার নেই। এছাড়া ১৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০টিতে এবং
২৬টি কলেজের ১০টিতে শহীদ মিনার নেই। জেলায় ৪৯৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
মধ্যে ৩৭০টিতে শহীদ মিনার  নেই ।
সদরের মাইজপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কৃষ্ণপদ সাহা বলেন, নতুন ভবন
নির্মানের জন্য এক বছর আগে পূর্বের শহীদ মিনার ভাঙ্গা হলেও নতুন করে
স্থায়ী নির্মাণ করা হয়নি। খুব শীঘ্রই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নড়াইলের কৃতি সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের নামে বীরশ্রেষ্ঠের
জন্মভূমি সদরের চন্ডিবরপুর ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদ নগরে একটি কলেজ এবং
একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও দু’টির একটিতেও শহীদ মিনার নেই।
এ ব্যাপারে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজের অধ্যক্ষ প্রনব কান্তি অধিকারী
বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে শহীদ মির্নার নির্মানের জন্য তিন বছর পূর্বে
তৎকালীন জেলা প্রাশাসক এবং জেলা পরিষদের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু
বিষয়টি আর এগোয়নি। এখন নিজস্ব অর্থায়নে শহীদ মিনার নির্মানের জন্য
পরিকল্পনা গ্রহন করেছি।
নড়াইল শাহাবাদ মাজীদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন
বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী  সমস্ত জাতীয় অনুষ্ঠানে আলোচনা ও
দোয়া অনুষ্ঠান করে থাকি। তবে ধর্মীয় কিছু বাধ্যবাধকতার কারণে শহীদ
মিনারটি করা হয়নি। বিষয়টি সরকারও জানে এবং অনুধাবন করে।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমান বলেন, যেসব মাধ্যমিক
অনুযায়ী  সমস্ত জাতীয় অনুষ্ঠানে আলোচনা ও
দোয়া অনুষ্ঠান করে থাকি। তবে ধর্মীয় কিছু বাধ্যবাধকতার কারণে শহীদ
মিনারটি করা হয়নি। বিষয়টি সরকারও জানে এবং অনুধাবন করে।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমান বলেন, যেসব মাধ্যমিক
স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে শহীদ মিনার নেই সেসব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার
নির্মানে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে প্রতি বছর
১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার তৈরি করে দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া
স্থানীয় সহায়তা এবং জেলা পরিষদ ও এলজিইডি অফিস থেকেও প্রতি বছর দু’একটি
করে শহীদ মিনার তৈরি হচ্ছে বলে জানান।
নড়াইল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের  নির্বাহী প্রকৌশলী অরুনাভ রায় জানান,
আমাদের নিয়মে রয়েছে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেরামত ও সংস্কার কাজের
বরাদ্দ আসে সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা যদি শহীদ মিনার তৈরি করে দিতে
বলেন তাহলে আমরা নির্মান করে দেই। তারা যদি শহীদ মিনার না চেয়ে ভবনের রং
করা বা অন্য কোনো চাহিদার কথা বলেন তাহলে আমাদের সদিচ্ছা থাকা সত্তেও
করতে পারি না। গত দু’বছরে একটি মাধ্যমিক স্কুলে নতুন শহীদ মিনার নির্মান
করে দেওয়া হয়েছে এবং আরও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের
টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, যেসব
মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে শহীদ মিনার নেই সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ
মিনার নির্মানের জন্য চিঠি দিয়ে অবগত জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা
দেওয়া হয়েছে।  যদি তারা না মানে তাহলে সরকারী নিয়ম মাফিক তাদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমাকে জানিয়েছেন,
‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সরকারিভাবে সারা বাংলাদেশে একই নকশায়
শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। এজন্য যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার
নেই সেসব বিদ্যালয়ে নতুন করে শহীদ মিনার তৈরি না করতে বলা হয়েছে’।