নড়াইলের সেই রহস্যময়ী নারী হাসপাতালে এখনো পরিচয় মেলেনি

নয়ল প্রতিনিধি
তিনি কথা বলছেন কিন্তু নিজের পরিচয় দেন না। কারো দেয়া খাবারও নেন না। রাত-দিন শুয়ে থাকেন একই জায়গায়। কাছে গেলেই তাড়িয়ে দেন। গত সাতদিন ধরে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী মহসিনের মোড় নামে একটি গ্রাম্য বাজারে একটি বন্ধ দোকানের সামনে পড়ে আছেন তিনি। কেউ তাকে খাওয়াতে বা তার পরিচয় জানতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ও বাজারের এক ব্যবসায়ী আনুমানিক চল্লিশ বছর বয়সী এই নারীকে উদ্ধার করে কালিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। অনাহারে তিনি চলাফেরার সামর্থ্যও হারিয়ে ফেলেছেন।
রহস্যময়ী এই নারীর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তার প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে অনেকেই মন্তব্য করছেন। তবে তার স্বজনদের এখনো কোনো সন্ধান মেলেনি।
মহসিনের মোড় বাজারের ব্যবসায়ী আলতাব শেখ জানান, এক সপ্তাহ আগে বিকেলের দিকে তিনি এই নারীকে রুফাজ ভূঁইয়ার বন্ধ দোকানের সামনে বসে থাকতে দেখেন। সন্ধ্যার পরও তাকে একই স্থানে দেখে তিনিসহ অনেকেই তার পরিচয় জানার চেষ্টা করেন। তবে ওই নারী পরিচয় না দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেন। কেউ কেউ খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করলে তাও খাননি। পরদিন সকালে তারা বাজারে গিয়েও তাকে একই অবস্থান দেখতে পান। গত ৭ দিন ধরে তিনি অনাহারে শুয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন।’
আলতাফ শেখ আরও বলেন, ‘তার স্বজনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অবস্থার বিবরণ দিয়ে অনেকেই ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু স্বজনদের কোনো সাড়া মেলেনি। অবশেষে তিনি ও পেড়লী গ্রাম পুলিশ মো. রাসেল শেখ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।’
গ্রাম পুলিশ মো. রাসেল শেখ জানান, চেয়ারম্যানের ফোন পেয়ে রাতেই তিনি ওই নারীর কাছে যান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
উপজেলার পেড়লী ইউপির চেয়ারম্যান জার্জিদ মোল্যা বলেন, ‘ঘটনাটি গত বুধবার রাতে জানতে পেরে ওই নারীকে গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’
কালিয়া হাসপাতালের চিকিৎসক মো. তাজ মল্লিক বলেন, ‘দীর্ঘ সময় অনাহারে থাকার ফলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।’
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনু সাহা বলেন, ‘ঘটনাটি জানতে পেরে খুবই মর্মাহত হয়েছি। ওই নারীর চিকিৎসাসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তার পরিচয় শনাক্তেরও চেষ্টা চলছে। আপনারাও চেষ্টা করেন কারো না কারো মাধ্যমে পরিচয় পাওয়া যাবে।