ঝিকরগাছায় ক্লিনিকের মালিক ও দাদার ষড়যন্ত্রে প্রাণ হারানোর প্রতিবন্ধী নবজাতক কি পাবে না বিচার !

ফলোআপ
আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা :
সম্প্রতি ১১আগস্ট রাতে বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ঘটে যাওয়া নৃশংস কর্মকান্ডের বিষয়ে ১২আগস্টে বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ১৩ ও ১৪ আগস্ট স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় “ঝিকরগাছায় ক্লিনিকের মালিক ও দাদার ষড়যন্ত্রে প্রাণ হারালো প্রতিবন্ধী নবজাতক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন যশোরের সিভিল সার্জন। অপরদিকে নিজেকে ও প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে দৌড় ঝাপ শুরু করেছেন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিরুল ইসলাম বিগত ১০-১২ বছর পূর্বে একটি মানবাধিকার সংগঠনের সাথে সংযুক্ত থাকার পরিচয় ও তার কিছু বন্ধু মহল সরকারি কর্মকর্তা ও সংবাদকর্মী হওয়ার করাণে তিনি তাদের পরিচয় ব্যবহার করে এলাকার মধ্যে রাম রাজত্ব সৃষ্টি করছে এবং তার স্ত্রী ও ডেন্টিসকে তিনি ব্যবস্যা পরিচালনা করছেন। তার বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে গেলে তিনি উল্লেখিত পদবীর ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হন বলে জানা যায়। এছাড়াও তাদের প্রতিষ্ঠানে রোগীরা ভিজিট দিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে গেলে ডাক্তার বিহীন নিজেরা আল্ট্রাসনোগ্রাম করে রিপোর্টে ডাক্তারের স্বাক্ষর ব্যতিত রোগীকে রিপোর্ট করার প্রমাণ পাওয়া যায়। তার স্ত্রী গাইনী ডাক্তার বা অভিজ্ঞতা সর্ম্পূণ নার্স না হয়েও ক্রমাগতই তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড পরিচালনা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে ঘটনার বিষয়ে সুমির পিত্রালয়ের অভিযোগ আমরা ক্লিনিকে গিয়ে আমাদের মেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাহিরে নিয়ে যেতে চাইলে সুুমির শশুর আমাদেরকে টাকার গরম দেখিয়ে আমাদের নিকট আমাদের মেয়ে দেননি বরং আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় আমাদেরকে গালিগালাজ করেন।
তবে মায়ের গর্ভের সন্তান গড়ে ওঠা নবজাতকটি প্রতিবন্ধী হওয়ায় যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক ও দাদার ষড়যন্ত্রে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখতে পারলো না সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া এক নবজাতক। কি ছিল তার অপরাধ, কেনো সে পৃথিবীর মুখ দেখতে পারলো না, কেনো মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় তাকে পৃথিবীর বুক থেকে বিদায় নিতে হল, কেনো দাদার টাকার কাছে মালিক জিম্মী হয়ে এমন নৃশংস ঘটনাটি ঘটিয়েছে, মানুষ অসুস্থ্য হলে ক্লিনিকে যায় ডাক্তারের সেবা নিতে আর ক্লিনিকে গেলেই রোগী ভর্তি না করে ও ডক্তারের পরিবর্তে ক্লিনিকের মালিকের স্ত্রী ডেন্টিস হয়ে কি ভাবে অপারেশন খিয়েটারে নিয়ে যায়, যখন অসুস্থ্য সুমির বাপের বাড়ির সদস্যরা উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অন্য স্থানে রের্ফার করতে চাইলো তখন কেনো ক্লিনিক মালিক রোগীর ছাড়পত্র দিলো না বরং তাদেরকে হুমকি ধামকি দেওয়ার কারণ কি, কেনো সংবাদকর্মীদের নিকট রোগীর ভর্তি ফরম দেখতে পেলো না, কেনো সংবাদকমীদের সামনে পরের দিন ভর্তির ফরম পূরণ করা হল, কেনো সংবাদকর্মীদের সংবাদ উপস্থাপনের কাজে বাঁধা দেওয়া হল ? এছাড়াও প্রথমে রোগীকে পূর্বাশা ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এন্ড ক্লিনিকে পেগনেসির জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য নিয়ে আসে তখন এই ক্লিনিকের রিপোর্টে কি করে দু’টি সন্তান পাওয়া গেলো এবং বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের একটা বাচ্চা ডেলিভারী হল তাহলে কি আর একটা বাচ্চা কোথায় গেল এমন শতশত প্রশ্ন জন্ম নিচ্ছে এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে। তবে ঘটনার বিষয়ে সঠিক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
বাঁকড়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিরুল ইসলামের নিকট আল্ট্রাসনোগ্রামের ডাক্তারের বিষয় জানতে চাওয়া হলে তিনি তথ্য দিতে অস্বিকার করেন এবং বলেন, তুমি এসে দেখে যাও।
সচেতন মহলের পক্ষে ঝিকরগাছার অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেবা’র প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মাস্টার আশরাফুজ্জামান বাবু বলেন, দেশের অধিকাংশ ক্লিনিক গুলোতে অভিজ্ঞ ডাক্তার ও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন অপারেশন থিয়েটার নাই। অনভিজ্ঞ ডাক্তার আর মানহীন পরিবেশে তারা দেদারসে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততা, তদারকির অভাব আর জনগণের অসচেতনতার সুযোগে অসাধু ক্লিনিক মালিকেরা বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলে রুগীদের তাদের ক্লিনিকে ভর্তি হতে বাধ্য করে। আর এভাবে প্রতিনিয়ত নবজাতক কিংবা গর্ভধারিণী মা অপচিকিৎসার শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। এভাবে আর কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয় সেজন্য এসকল ক্লিনিকগুলোতে নজরদারী বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করছি।
যশোরের সিভিল সার্জন ডাঃ বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতি মধ্যে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমি এখনো পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্ট হাতে পায়নি।