Type to search

চৌগাছায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ও শিশুখাদ্য সামগ্রী পাচ্ছে ১৩ হাজার ৮শ ৬৫ পরিবার

যশোর

চৌগাছায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার ও শিশুখাদ্য সামগ্রী পাচ্ছে ১৩ হাজার ৮শ ৬৫ পরিবার

অমেদুল ইসলাম, চৌগাছা (যশোর)
যশোরের চৌগাছায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার সামগ্রী পাচ্ছেন ১৩ হাজার ৫শ পরিবার। শিশু খাদ্য পাচ্ছে ৩শ ৬৫ পরিবার। উপজেলা ব্যাপী বিভিন্ন গ্রামের কর্মহীন হয়ে পড়া ও অসহায় ব্যক্তিদের পরিবারে পৌঁছে যাচ্ছে এই উপহার সামগ্রী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে করোনা ভাইরাসের এই সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিল হতে ১৩৫ টন চাল কর্মহীন এসব মানুষের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে নগদ ৩ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা। শিশু খাদ্যের জন্য পাওয়া গেছে ৯৫ হাজার টাকা। এছাড়া উপজেলা কল্যাণ তহবিলের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি ২ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা প্রদান করেছেন।
কল্যাণ তহবিলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী মিলে দিয়েছেন ২৫ হাজার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জাগদীশপুর ইউপি চেয়ারম্যান তবিবর রহমান খান ২১ হাজার ৫শ, উপজেলার অফিসার বৃন্দ ৫০ হাজার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলামের একমাসের বেতনের অর্ধেক ২০ হাজার টাকা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমানের একমাসের বেতনের অর্ধেক ২০ হাজার টাকা, উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন নাহার পপির বেতনের অর্ধেক ১৩ হাজার ৫শ টাকা, স্বরূপদাহ ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ার হোসেন ও পাশাপোল ইউপি চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ ১০ হাজার টাকা করে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক ও ভিসির পিএস ড. আশিকুর রহমান বিপ্লব ১০ হাজার টাকা, পরিচয় দিতে অনিচ্ছুক জনৈক সুমন অগ্রযাত্রার সভাপতি হাসিবুর রহমানের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের একটি সরকারি দপ্তরের একজন নারী কর্মী ও থানাপাড়ার বাসিন্দা একজন নারী ৫ হাজার টাকা করে, ফতেপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এসএম মোমিনুর রহমান ৫ হাজার, শাহাজান আলী নামে এক প্রাথমিক শিক্ষক ২ হাজার টাকা প্রদান করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন এসব টাকায় ইতোমধ্যেই উপজেলার ৭ হাজার ১শত পরিবারে ১০ কেজি করে চাল, ২ কেজি করে আলু, ৫শ গ্রাম করে মসুর ডাল ও ১টি করে সাবান, ২ হাজার ৬শ পরিবারে ১০ কেজি করে চাল ও ১৩শ পরিবারে এক লিটার করে তেল প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার আরো ৩ হাজার ৮শ পরিবারে ১০ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ৫শ গ্রাম ডাল এবং ৩শ ৬৫ পরিবারের শিশুদের জন্য ৪শ গ্রামের একটি করে মিল্ক ভিটা দুধ, ৫শ গ্রাম সুজি ও ৫শ গ্রাম করে চিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌছে দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তারা ২/১ দিনের মধ্যেই এগুলি পেয়ে যাবেন। অর্থাৎ এরইমধ্যে ৯ হাজার ৭শ পরিবারে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের প্যাকেট পৌছে গেছে। আরো ৩ হাজার ৮০০ পরিবারে পৌছে দেয়া হবে। উল্লেখিত শিশুখাদ্যও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৩৬৫ পরিবারে পৌছে যাবে। এতে করে আমরা উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের প্রতিটির প্রায় ১১শ ব্যক্তি ও চৌগাছা পৌরসভার ১৪শ ২০ ব্যক্তি এবং ৩৬৫ পরিবারে শিশুখাদ্য হিসেবে এই উপহার সামগ্রী পৌছাতে সক্ষম হচ্ছি।
তিনি বলেন কল্যাণ তহবিলের অর্থ আমরা স্বচ্ছতার সাথে স্বচ্ছতার সাথে সমন্বয় করে কোন কোন ক্ষেত্রে খাদ্যসহায়তা প্রাপ্তদের আলু, ডাল, তেল, সাবান কেনার কাজে ব্যয় করছি। এই টাকা থেকে উপজেলা হাসপাতালে দুটি থার্মাল স্ক্যানার ও ৪টা নেবুলাইজার মেশিন কিনে দিয়েছি। ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে উপজেলা হাসপাতালের জন্য ৪টা কমপ্লিট অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করে দিয়েছি। এছাড়া করোনা সনাক্ত রোগীদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী ও ঔষধ ক্রয়, উপহার সামগ্রী পৌছানোর প্যাকেট ক্রয়সহ ছোট খাটো ব্যয়ের কাজগুলিতে খরচ করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুল ইসলাম জানান প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের এই চাল ও অর্থ জনপ্রতিনিধিরা বিতরণের কথা থাকলেও আমরা উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধির সাথে আলোচনা করে সেগুলো যেন কোনভাবেই মিস ম্যানেজমেন্ট না হয় সেজন্য উপজেলা পরিষদ হল রুমে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অগ্রযাত্রার স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে প্যাকেজিং করছি। এরপর প্রতিটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে গঠিত কমিটিগুলো সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অসহায় ও কর্মহীন পরিবারের তালিকা করে উপজেলায় পাঠাচ্ছেন। আমরা সেই তালিকা ধরে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের ১জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা, ১জন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বা উপ-সহাকারী কর্মকর্তা ও একটি বাড়ি একটি খামারের একজন মাঠকর্মীকে সাথে রেখে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে বাড়ি বাড়ি পৌছে দিচ্ছি। এতে করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারগুলো নিজ বাড়িতে অবস্থান করেই উপহার সামগ্রী পেয়ে যাচ্ছেন। উপহার সামগ্রী পৌছাতে সরেজমিনে গিয়ে তালিকায় কোন বিত্তশালী পরিবার পেলে তাৎক্ষণিকভাবে সেটা পরিবর্তন করে দেয়া হচ্ছে। আমরা তাদের ছবিও তুলছিনা। ডকুমেন্টের জন্য কিছু ছবি তুললেও সেগুলো কোনভাবেই যেন সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।