গভীর রাজনৈতিক সংকটে দেশ : ইকবাল কবির জাহিদ

অপরাজেয় বাংলা ডেক্স : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড ইকবাল কবির জাহিদ বলেছেন, দেশ আজ গভীর রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত। বর্তমান সরকার ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। এর বিরুদ্ধে কমিউনিস্ট বাম গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন আজ জরুরি রাজনৈতিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) তেভাগা আন্দোলনের পুরোধা কমরেড অমল সেনের ১৮তম স্মরণসভা উপলক্ষে বাকড়ি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কৃষি, কৃষক ও জনজীবনের সংকট শীর্ষক আলোচনায় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
স্মৃতি রক্ষা কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নারায়ণচন্দ্র পাঠকের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় ইকবাল কবির জাহিদ আরো বলেন, দেশের ভোট ব্যবস্থা বলে কিছু নাই। সরকার ও প্রশাসন মিলে সব অপর্কম করছে। মাইক দিয়ে ডেকেও ভোটের মাঠে ভোটারদের নেওয়া যাচ্ছে না। করোনা মহামারী জানিয়ে গেল আজকের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুরবস্থা আর লুটপাটের কথা। সাহেদ-সাবরিনারা সামনে এসেছে অথচ শত শত কোটি টাকার মাল সাপ্লাই না দিয়ে টাকা উঠিয়ে মিঠুরা বিদেশ পাড়ি দিয়েছে। ভুয়া টেস্ট, নিম্নমানের মাস্ক সাপ্লাই দিয়ে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। মানুষের জীবন-মৃত্যু নিয়ে বাণিজ্য চলছে। করোনা ভ্যাকসিন বেক্সিমকোর হাতে দিয়ে সরকার ‘ব্যবসায়ী-বান্ধব’ তা প্রমাণ করেছে।
তিনি আরো বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে ১৪ দলের ২৩ দফা ও নির্বাচনী ওয়াদা ভঙ্গ করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিককে বেকার করা হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ লুটপাটের পথকে প্রশস্ত করেছে সরকার। পুরাতন কলকব্জা ও কর্তৃপক্ষের দুর্নীতির দায় শ্রমিকদের চাপানো হচ্ছে। পাটকল বন্ধ হওয়ায় চাষিরাও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একইভাবে রাষ্ট্রয়ত্ত চিনিকল বন্ধ করে শ্রমিক ও আখচাষিদের বেকার করা হচ্ছে। আধুনিকীকরণের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রকিদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর হামলা করে নেতাকর্মীদের আহত ও আটক করা হচ্ছে। জবাবদিহিতা না থাকায় সরকার এ কাজগুলো করছে। কেন তারা জানে ভোট নিতে জনগণের দুয়ারে তাদের যেতে হবে না।
আলোচনা সভায় অন্য নেতারা বলেন, দেশের উন্নয়নের নামে লুটপাটকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। সংসদ সদস্যরা সরাসরি দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত। সেই সাথে দেশে শিশু থেকে বৃদ্ধা কেউ নিরাপদ নয়। বিচারহীনতার কারণে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাও নিরাপদ নয়। কেবল শাসক গোষ্ঠী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নির্মূল করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের নেতা অধ্যাপক আফছার আলী, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুজ্জামান লায়েক, যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও দৈনিক সত্যপাঠের সম্পাদক অধ্যাপক আমিরুল আলম খান, আনছার আলী দুলাল, মোজাম্মেল হক, এসএম শরিফুল ইসলাম, নাজিম উদ্দীন, গাজী আব্দুল হামিদ, জিল্লুর রহমান ভিটু, মশিউর রহমার জিকু, সুমন্ত অধিকারী, বিথীকা বিশ্বাস, ঘনশ্যাম মজুমদার, কৃষ্ণপদ বিশ্বাস প্রমুখ। সূত্র, সুবর্ণভূমি