কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক গ্রেফতার
অনলাইন ডেস্কঃ যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোর হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সহকারী পরিচালক মাসুদকে এর আগে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়।
গ্রেফতার অন্যরা হলেন- কেন্দ্রের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, প্রবেশন অফিসার মুশফিকুর রহমান, শরীরচর্চা শিক্ষক ওমর ফারুক ও কারিগরি শিক্ষক শাহানুর আলম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি তিন কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আহত হয় আরো অন্তত ১৫ থেকে ১৭ জন।
নিহতরা হলো, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ছোলিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরামানিকের ছেলে নাইম হাসান (১৭), খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা দক্ষিণপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান (১৮) ও বগুড়ার শেরপুরের মহিপুর গ্রামের নূরুল ইসলাম নুরুর ছেলে রাসেল ওরফে সুজন।
এ ঘটনায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও এক কিশোরসহ ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ঘটনা তদন্তে ইতিমধ্যে দুটি কমিটি গঠন করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজসেবা অধিদপ্তর।
যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, কয়েকজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর পাঁচজনকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এর আগে শুক্রবার রাতে নিহত পারভেজ হাসানের বাবা রোকা মিয়া যশোর কোতয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এজাহারে তিনি অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করেন বলে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ ইনসপেক্টর রকিবুজ্জামান জানান।
শুক্রবার বিকেলে যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম সুবর্ণভূমিকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে হতাহতের ঘটনায় সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে সাময়িক বরখাস্ত করার খবর জানান। একই সঙ্গে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির কথাও উল্লেখ করেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমিয় দাসের বর্ণনায়- ঘটনার দিন দেড় ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি মরদেহ আসে কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে। সন্ধ্যা ছয়টা ৩৮ মিনিটে নাইম হাসান, সাড়ে সাতটায় পারভেজ হাসান এবং রাত আটটায় আসে রাসেলের মরদেহ।
এক জনের মাথায় ভারি কোনো বস্তু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ হতাহতের ঘটনার পেছনে ‘বন্দি’ কিশোরদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হিসেবে বর্ণনা করলেও ওই রাতেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আনসার সদস্যদের বেধড়ক মারপিটি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে মোট বন্দির সংখ্যা ২৮০ বলে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এখানে লাশ উদ্ধার ও মারধরের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। দায়িত্বে অবহেলা ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য সুপারিশও করেছিল। তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
সূত্রঃ সুবর্নভূমি