Type to search

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভিটামিন ডি-র কোন ভূমিকা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ক্রমেই বাড়ছে।

অন্যান্য

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভিটামিন ডি-র কোন ভূমিকা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন ক্রমেই বাড়ছে।

বিবিসি বাংলা নিউজ: স্বাস্ধ্য বিষয়ে নজরদারি করে এমন নানা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ এখন খতিয়ে দেখছে।

পরামর্শ কী?

মহামারির কারণে যেহেতু বহু মানুষকে ঘরের ভেতর থাকতে হচ্ছে, তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন অনেকের শরীরেই ভিটামিন ডি-র ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।

আমাদের ত্বক সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি তৈরি করে। কাজেই স্বাভাবিকভাবে ভিটামিন ডি তৈরির জন্য আমাদের বাইরে সময় কাটানোর প্রয়োজন।

ব্রিটেনে জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষ করে যারা বাইরে বেরোতে পারছে না , তারা প্রতিদিন ১০ মাইক্রোগ্রাম করে ভিটামিন ডি খাওয়ার কথা ভাবতে পারেন।

মহামারি শুরু হবার আগেই যুক্তরাজ্যের মানুষকে শীতের মরশুমে আলাদাভাবে ভিটামিন ডি খাবার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। বিশেষ করে যারা বেশি সময় কাটান ঘরে, এবং যারা ত্বকের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখেন অর্থাৎ যাদের পোশাকের কারণে ত্বক সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসে কম।

যাদের চামড়ার রং বাদামি বা কালো তারা এমনিতেই সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি আহরণ করতে পারেন কম।

ভিটামিন ডি কেন প্রয়োজন?

সুস্থ হাড়, দাঁত এবং পেশির জন্য ভিটামিন ডি-র প্রয়োজন সেকথা আমরা অনেকেই জানি। আমরা জানি ভিটামিন ডি-র অভাবে হাড় ঠিকমত গড়ে ওঠে না এবং শিশুরা রিকেট নামে রোগের শিকার হতে পারে এবং প্রাপ্তবয়স্করা অস্টিওম্যালাসিয়া নামে দুর্বল হাড়ের রোগে ভুগতে পারেন।

কিন্তু এখন বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিটামিন ডি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে।

কোন কোন গবেষণা বলছে শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রার ভিটামিন ডি থাকলে তা সাধারণ সর্দিজ্বর এবং ফ্লু-তেও সাহায্য করে। তবে তারা একথাও বলছেন এই গবেষণার তথ্যপ্রমাণ সবক্ষেত্রে একরকম নয়। কিছু রকমফেরও আছে।

ব্রিটেনের পুষ্টি বিষয়ক বিজ্ঞান গবেষণা উপদেষ্টা কমিটি এখন একটি গবেষণা চালাচ্ছে যাতে দেখা হচ্ছে সংক্রমণজনিত বক্ষব্যাধিতে ভিটামিন ডি ঠিক কীভাবে কাজ করে।

ভিটামিন ডি কি করোনাভাইরাসে কাজ করে?

বিজ্ঞানীরা বলছেন ভিটামিন ডি, কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর সে বিষয়ে এখনও নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ না পাওয়া গেলেও, এই মহামারির সময়ে ভিটামিন ডি সেবনের স্বাস্থ্যগত কিছু সুফল হয়ত পাওয়া সম্ভব।

ভিটামন ডি ক্যাপসুলছবির কপিরাইটGETTY IMAGES
Image captionভিটামিন ডি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, তবে যতটুকু পরিমাণ এই ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে তার বেশি এই ভিটামিন খাওয়া ঠিক নয়

পুষ্টি, প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য ব্রিটেনের একটি গবেষণা রিপোর্ট বলছে, “ভিটামিন ডি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান- সেভাবেই এই উপাদানকে দেখা উচিত। কোভিড-নাইনটিন মোকাবেলার একটা ‘ম্যাজিক অস্ত্র হিসাবে এটাকে দেখা ঠিক হবে না, কারণ এখনও গবেষণা থেকে নিশ্চিত তথ্যপ্রমাণের অভাব রয়েছে। মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করলে যে কোন রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সে ভাল অবস্থানে থাকে। সেদিকেই মানুষকে জোর দিতে হবে।”

কোন কোন গবেষক অবশ্য বলছেন কেউ যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়, এবং তার শরীরে যদি ভিটামিন ডি-র অভাব থাকে, তাহলে এই ভাইরাস তার বেশি ক্ষতি করতে পারে। তবে এই সংক্রমণ যাদের ক্ষেত্রে ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তাদের অন্য শারীরিক ঝুঁকিও থাকে, যেমন হার্টের সমস্যা বা ডায়েবেটিস। ফলে নিশ্চিতভাবে একটা উপসংহারে পৌঁছন কঠিন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক জন রোডস্-এর মতে, ভিটামিন ডি-র প্রদাহ কমানোর ক্ষমতা আছে। তিনি বলছেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কেউ গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে, যখন তাদের ফুসফুস গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে এতটাই সক্রিয় হয়ে ওঠে যে তার ফলে “সাইটোকিন স্টর্ম” নামে প্রদাহ দেখা দেয়। এই প্রদাহ শরীরের ভাল কোষগুলোকে তখন ধ্বংস করতে শুরু করে।

ভিটামিন ডি-র যেহেতু প্রদাহ কমানোর ক্ষমতা আছে, তাই এক্ষেত্রে ভিটামিন ডি ওই মারাত্মক প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে তিনি বলেছেন এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।

কতটা ভিটামিন ডি খাওয়া উচিত?

ওষুধ হিসাবে ভিটামিন ডি নিরাপদ। কিন্তু ডাক্তাররা বলছেন তাই বলে অনেক পরিমাণে এটা খাওয়া ঠিক না। চিকিৎসক যতটুকু খাবার পরামর্শ দিচ্ছেন তার থেকে বেশি মাত্রায় ভিটামিন ডি খেলে দীর্ঘমেয়াদে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।

Banner image reading 'more about coronavirus'