আবারও ‘মার’ খেল ঈদের ব্যবসা
পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে কয়েক হাজার কোটি টাকার কোরবানির পশু বেচাবিক্রি হলেও তৈরি পোশাক, জুতা, রেফ্রিজারেটর, মোবাইল, আসবাবসহ অন্য অনেক পণ্যের বিক্রিও মন্দ হয় না। সেই ব্যবসা ধরতে এসব খাতের ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন।
জানতে চাইলে দেশীয় ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফ্যাশন উদ্যোক্তা সমিতির (এফইএবি বা ফ্যাশন উদ্যোগ) সাবেক সভাপতি আজহারুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কোরবানির ঈদের ব্যবসার জন্য পোশাক তৈরি যখন শেষ পর্যায়ে, তখনই বিধিনিষেধের ঘোষণা আসে। ইতিমধ্যে ঈদের ব্যবসার বেশির ভাগ দিনই চলে গেছে।
আজহারুল হক আরও বলেন, কোরবানির ঈদের ঠিক আগের সপ্তাহে রাজধানীতে পোশাক কেনাবেচা তেমন জমজমাট থাকে না। এ সময় গরুর হাট ও গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার দিকেই বেশি ঝোঁক থাকে মানুষের। করোনা সংক্রমণ যেহেতু বাড়ছে, তাই শেষ দিকে দোকানপাট খুললেও খুব বেশি যে সুবিধা হবে, সেই আশা করা যাচ্ছে না।
পশু কোরবানির কারণে ঈদুল ফিতরের আগে রেফ্রিজারেটর বিক্রি ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। গতবারও করোনার মধ্যে বিপুলসংখ্যক রেফ্রিজারেটর বিক্রি হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, বিধিনিষেধের কারণে চলতি বছর পণ্যটির মৌসুমি বিক্রিতে ধস নেমেছে। তা ছাড়া কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের ফুটবল খেলা আর ইউরো উপলক্ষে টিভি বিক্রির সুযোগও এবার নষ্ট হয়েছে।
জানা যায়, সারা বছর প্রায় ২০ লাখ রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার (ডিপ ফ্রিজ) বিক্রি হয়। এর মধ্যে ৬০-৬৫ শতাংশ রেফ্রিজারেটর বিক্রি হয় কোরবানির আগে। এই সময়ে ফ্রিজার বিক্রি হয় ৮০-৮৫ শতাংশ।
জানতে চাইলে সনি-র্যাংগসের মহাব্যবস্থাপক জানে আলম প্রথম আলোকে বলেন, কোরবানির ঈদের এক মাস আগে থেকে রেফ্রিজারেটর বিক্রি শুরু হয়। এবার বিধিনিষেধের কারণে সেটি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়াকড়ির কারণে অনলাইনেও গতবারের মতো বিক্রি হচ্ছে না। শেষ মুহূর্তে দোকানপাট খোলার অনুমতি দেওয়ার ফলে গতবারের তুলনায় ৪০-৪৫ শতাংশ বিক্রি হতে পারে।
পোশাক ও রেফ্রিজারেটরের মতো না হলেও কোরবানির ঈদের আগে আসবাবের বিক্রিও বাড়ে। তবে বিধিনিষেধের কারণে সেই ব্যবসা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না এই খাতের ব্যবসায়ীরা। বিক্রি না থাকায় ইতিমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানই উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে।
সামগ্রিক বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বিধিনিষেধের কারণে ঈদের ব্যবসা করতে না পেরে ৫০-৬০ হাজার অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ব্যবসা থেকে ছিটকে যাবেন। ঈদের আগের কয়েক দিন ব্যবসা করার সুযোগ পেলেও বড় ধরনের লোকসান এড়ানোর সুযোগ নেই।সূত্র,প্রথমআলো