Type to search

অভয়নগরে নির্যাতনের পর মেধাবী শিশুর বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের

অভয়নগর

অভয়নগরে নির্যাতনের পর মেধাবী শিশুর বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের

স্টাফ রিপোর্টার : দুই শিশুর মাঝে খেলার মাঠে ধাক্কা ধাক্কির ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের শিশুকে অমানবিক নির্যাতনের পর খায়েশ মেটেনি, উল্টে নির্যাতিত সেই মেধাবী শিশু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য থানায় সন্ত্রাসী ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। যশোরের অভয়নগর উপজেলার চেঙ্গুটিয়া গ্রামে গত বুধবার এ ঘটনাটি ঘটে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ওই গ্রামের মোজাহার হোসেনের ছেলে বায়েজিদ হোসেন রুহান(১২) একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। পঞ্চম শ্রেণিতে সে জিপিএ ৫ পেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। খেলা ধূলায় সে পারদর্শি। ইতোমধ্যে সে বেশ কিছু খেলায় মেডেল পেয়েছে। এতে ঈষান্বিত রোহানের বন্ধুরা । করোনার প্রভাবে স্কুল বন্ধ থাকায় খেলা ধূলায় সময় কাটে রোহানের। রুহান জানায়, ঘটনার দিন বাড়ির পাশে বন্ধুদের সাথে হা ডু ড খেলা করছিলো। প্রতিবেশি আব্দুর রশিদের ছেলে জিসান (১১) এ খেলায় অংশ গ্রহন করে। খেলার মাঝ পর্যায়ে রুহান ও জিসানের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি হয়। এ ঘটনায় জিসানের চাচা ইমন হোসেন উত্তেজিত হয়ে রুহান কে মার ধর করে।রুহান কাঁদতে কাদঁঁতে বাড়িতে আসে।
কি ঘটেছে, বিষটি জানার জন্য রুহানের চাচা ইনতাজ আলী রুহানকে সাথে নিয়ে জিসানদের বাড়িতে যায়। এ সময়ে জিনাসেন পরিবারের সাত আটজন লোক মিলে লোহার রড ও লাঠি সোটা দিয়ে রুহানকে বেদম ভাবে পেটাতে থাকে। রোহানের মুখের মধ্যে লোহার রড ঢুকানোর চেষ্টা করা হয়। রোহানের চাচা ইনতাজ হোসন জানান, সে ঠেকাতে গেলে তাকেও মার ধর করা হয়। তার চোখের সামনে রুহানকে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাত্ব করা হয়। রুহানের মা বলেন, আমার চোখের সামনে ছেলেকে ওরা এক জন পিটিয়ে ধাক্কা দিয়ে অপর জনের কাছে দিচ্ছে,সে পিটিয়ে আর এক জনের কাছে দিচ্ছে এ ভাবে চক্রাকারে গণ পিটুনি দিচ্ছে । আমি ঠেকাতে গেলে ওরা আমাকেও মার ধর করে। চেচামেচি শুনে রুহানের ফুফু এগিয়ে আসলে তাদেরকে ও মারধর করা হয়। পরে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে রুহানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
শিশু রুহানকে নির্যতন সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতে বৃহস্পতিবার বিকালে জিসানের বাড়িতে গেলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে পুরুষ লোক কেউ কাছে আসে নি।
জিসানের আম্মা জানান, রুহান তার ছেলেকে খেলার মাঠে মারধর করেছে। তাই আমি রুহানকে সামান্য পিটিয়েছি। সামান্য পিটানোয় রুহানের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন হয়েছে কি ভাবে ? প্রশ্ন করলে জিসানের আম্মা বলেন, রুহানের বাড়ির লোকজন রোহানকে পিটিয়ে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।
এ ঘটনায় ওই দিন দুপুরে জিসানের পিতা আব্দুর রশিদ বাদি হয়ে সন্ত্রাসী হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা উল্লেখ করে রুহান ও তার পরিবারের লোকদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে। পরে রুহানের পিতা মোজাহার হোসেন বাদি হয়ে শিশু নির্যাতনের বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ করে।
মামলার তদন্তকারি থানার এস আই উজ্জল হোসেন জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে মারা মারি হয়েছে। এতে রুহান নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তার শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।