অভয়নগরে জীবিত পিতাকে মৃত দেখিয়ে সম্পত্তি জালিয়াতি
স্টাফ রিপোর্টার-ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে জীবিত পিতাকে মৃত দেখিয়ে সম্পত্তি জাল দলিল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এ জাল দলিল করা হয়।। এ ঘটনায় জীবিত পিতা ক্ষিতিশ হালদারের ভাই অমিতাভ হালদার হরেন গত ২৪ জুলাই প্রতিকার চেয়ে জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে,যশোরের অভয়নগর উপজেলার বিভাগদী গ্রামের ক্ষিতিশ চন্দ্র হালদার এখনও জীবিত আছেন। তার তিন ছেলে রয়েছে। তারা হলেন সরবিন্দু কুমার হালদার, গোবিন্দ কুমার হালদার ও প্রদীপ কুমার হালদার। মেজ ছেলে গোবিন্দ কুমার হালদার অন্য দুই ভাইকে না জানিয়ে গোপনে দলিল লেখক আকবর হোসেনের (লাইসেন্স নম্বর ৮৮) সঙ্গে আঁতাত করে বাবা ক্ষিতিশ চন্দ্র হালদারকে মৃত দেখিয়ে এবং অন্য দুই ভাইকে বাদ দিয়ে নিজেকে একমাত্র দাবি করে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবুল আক্তারের স্বাক্ষর জাল করে ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে। এরপর পার্শ্ববর্তী ভাটপাড়া গ্রামের আব্দুল মোল্যার ছেলে বাচ্চু মোল্যার কাছে ৪২৬ খতিয়ানের ১২৭০ দাগের ২৫ শতক বাস্ত জমি দুই লাখ ৫৬ হাজার টাকা মূল্য দেখিয়ে তা বিক্রি করেন এবং দলিল করে দেন। দলিল নম্বর ৫৯৫১/১৮ তারিখ ৮/১১/২০১৮। ওই জমির বাজার মূল্য বর্তমানে অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও সাব-রেজিস্ট্রারকে ম্যানেজ করে দলিলে কম মূল্য দেখানো হয়েছে। জমির দাতা, গ্রহীতা ও দলিল লেখক আকবর হোসেনের যোগসাজশে এ জাল দলিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান (বর্তমানে বরখাস্ত) বাবুল আক্তার লিখিত প্রত্যয়ন দিয়েছেন। তিনি ক্ষিতিশ চন্দ্র হালদারের তিন ছেলের কথা উল্লেখ করেছেন এবং গোবিন্দ কুমার হালদার একমাত্র ওয়ারিশদার হিসেবে যে সনদ জমা দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ জাল ও ভিত্তিহীন। ক্ষিতিশ চন্দ্র হালদার জীবিত আছেন বলে প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান মোড়ল বলেন, ক্ষিতিশ চন্দ্র হালদার এখনও বেঁচে আছেন। তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় তার এক ছেলে জাল ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে জমির দলিল করেছে।
দলিল লেখক আকবর হোসেন বলেন, দাতা ওয়ারিশ সনদ দিয়েছে, সেই সূত্রে আমি দলিল করেছি। আমি জানতাম না দাতার ওয়ারিশ ভুয়া। দাতার বাড়ির পাশে আপনার বাড়ি, আপনি কেন জানবেন না- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি দলিল লেখক, চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন পেয়েছি তাই দলিল করেছি।
অভয়নগর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মো. ওমর ফারুক বলেন, আমি তো জানি না। ওয়ারিশ সনদ থাকলে রেজিস্ট্রি করে থাকি। ওয়ারিশ সনদ জাল হলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
জেলা রেজিস্ট্রার যশোর মো. শাহজাহান সর্দার বলেন, আমি এখনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।