আজ রোববার দুপুরে জেলা পুলিশের পাঠানো এক প্রেসনোটে এ তথ্য জানানো হয়

মিঠুন দত্ত:
অভয়নগর উপজেলায় নবনির্বাচিত সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য উত্তম সরকারকে চাঁদার টাকা না পেয়ে করা হয়। গত সোমবার রাত সোয়া আটটার দিকে উপজেলার হরিসপুর গ্রামে তার নিজ বাড়ির পাশে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার নিহত উত্তম সরকারের স্ত্রী শ্রাবন্তী সরকার বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি মামলা করেন । পুলিশ কথিত নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
গতকাল রোববার দুপুরে জেলা পুলিশের পাঠানো এক প্রেসনোটে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামীরা হলেন, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা গ্রামের ইসাহাক গোলদারের ছেলে ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল (১৯), যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী গ্রামের নিতাই বিশ্বাসের ছেলে প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট (৪৬), মনিরামপুর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে পল্লব বিশ্বাস ওরফে সুদিপ্ত (২৪), সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিন কদমতলা গ্রামের শিবপদ মন্ডলের ছেলে প্রশান্ত মন্ডল (৩৮) এবং খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের বিষ্ণুপদ মন্ডলের ছেলে বিজন কুমার মন্ডল ওরফে বিনোদ (৪২)।
এরমধ্যে প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।
এ সময় পুলিশ আটককৃতদের নিকট থেকে লোহার তৈরি একটি ওয়ান শুটারগান, তিন রাউন্ড গুলি, দুটি গুলির খোসা, ছয় রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, একটি এয়ারগান, একটি ককটেল, ১০ গ্রাম গান পাউডার, ৫০ গ্রাম বোমা তৈরীর তারকাটা, দুটি মোটরসাইকেল এবং পাঁচটি ম্বোাইল ফোন উদ্ধার করে।
গত সোমবার রাত সোয়া আটটার দিকে অভয়নগর উপজেলার হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে উত্তম সরকারকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
নিহত ইউপি সদস্য উত্তম সরকার উপজেলার হরিশপুর গ্রামের অশান্ত সরকারের ছেলে।
ঘটনার পরদিন গত মঙ্গলবার নিহত উত্তম সরকারের স্ত্রী শ্রাবন্তী সরকার বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় একজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে। ওইদিন পুলিশ অর্ধেন্দু মল্লিক (৪৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, আসামীরা চরমপন্থী কথিত নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতিপূর্বে বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় সংঘবদ্ধ হয়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে নতুন দল গঠন করে জেলার অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুরসহ আশপাশ জেলা সমুহে বিভিন্ন মাছের ঘের দখল, হত্যাকান্ড ও চাঁদাবাজি করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তারা সুন্দলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত সদস্য উত্তম সরকারের নিকট চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না পেয়ে তারা উত্তম সরকারকে গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিবি) পরিদর্শক শেখ শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম হোসেন ও মফিজুল ইসলাম গত শনিবার ও গতকাল রোববার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা, যশোর জেলার অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের নিকট থেকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য, মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম হোসেন বাদী হয়ে অভয়নগর ও মনিরামপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।